ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
শীতের আমেজ বাড়তে না বাড়তেই গ্রামবাংলার চিরায়ত দৃশ্য আবারও চোখে পড়তে শুরু করেছে। খেজুর গাছের মাথায় উঠে রস সংগ্রহের কাজে নেমেছেন স্থানীয় গাছিরা এবং রাজশাহী জেলা থেকে আগত শ্রমিকরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সখীপুর উপজেলার আড়াই পাড়া গ্রামে দেখা যায়, খেজুর গাছের মাথায় দা ও অন্যান্য সরঞ্জাম হাতে একজন গাছি রস সংগ্রহের জন্য গাছের বুক চিরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রতিবছর আশ্বিন-কার্তিক মাসের শেষ থেকে শুরু হওয়া এই কর্মব্যস্ত সময় পৌষ-মাঘ পর্যন্ত চলে। খেজুরের রস থেকে তৈরি হয় গুড়, পাটালী, পুরুস যা বাংলার ঐতিহ্য ও শীতের জনপ্রিয় স্বাদের অন্যতম প্রধান উপাদান।
আড়াই পাড়া গ্রামের ঈমান আলি বলেন, “শীতের আগমন মানেই খেজুরের রসের সুবাস। ভোরে হাঁড়ি হাতে গাছিদের পাতিল নামাতে দেখা যায়। অনেকেই আবার ভাপা পিঠার সঙ্গে টাটকা রস খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন।” তিনি জানান, আগে তিনি ও স্থানীয় গাছিরা গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতেন, কিন্তু বয়সের কারণে এখন কাজ করতে পারছেন না। তাই রাজশাহী থেকে আসা গাছিরা এই দায়িত্ব পালন করেন।
গাছি আ. লতিফ মিয়া বলেন, “সময়মতো গাছ পরিষ্কার ও কাটা না হলে রস জমে না। তাই গাছের যত্ন ও পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজে ঝুঁকিও কম নয়। অনেকেই রস সংগ্রহের সময় গাছ থেকে পড়ে আহত হন। আমরা এক সিজনে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৮-১০ কেজি রস পাই। রস থেকে গুড় বানিয়ে বিক্রি করি। আমাদের রস ও গুড় একদম খাটি।”
স্থানীয়রা মনে করেন, খেজুরের রস ও গুড় শুধু খাবার নয়, এ অঞ্চলের সংস্কৃতি ও স্মৃতির অংশ। তাই প্রতিবছর শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে খেজুরের রস সংগ্রহ যেন গ্রামীণ জীবনের এক উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

