
ঢাকার খিলগাঁও ও বাসাবো এলাকাজুড়ে রাস্তাঘাটের যে চিত্র এখন দৃশ্যমান, তা শুধু নাগরিক দুর্ভোগই নয়, বরং একটি ব্যর্থ নগর ব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি। এলাকাগুলোতে প্রতিনিয়ত জনসাধারণ, শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। ছবিতে দেখা যায়, রাস্তার একাংশ পিচ উঠে গিয়ে কাঁচা মাটিতে পরিণত হয়েছে, কোথাও কোথাও খোঁড়াখুঁড়ির পর তা খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। ফুটপাত ও ড্রেনের পাশে ময়লার স্তূপ জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, এবং এইসব জায়গা দিয়ে হেঁটে চলাও হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশেষ করে বাসাবো বাজার সড়ক, খিলগাঁও তালতলা মোড়, এবং খিলগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন রাস্তাগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় প্রতিনিয়ত রিকশা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে, যাদের অনেকে শিশু, বৃদ্ধ এবং নারী।
এই ভঙ্গুর অবস্থার পেছনে দায় শুধু প্রাকৃতিক নয়, বরং পরিকল্পনার ঘাটতি, ঠিকাদারি অনিয়ম এবং দায়িত্বশীলদের নজরদারির অভাবও দায়ী। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচিত প্রথমেই জরুরি ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক রাস্তার মূল্যায়ন করে অবকাঠামো সংস্কারের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা। ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ময়লা ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করে তদারকি বাড়ানো উচিত।
রাস্তার উন্নয়নকাজ যেন পরিকল্পিতভাবে এবং জনগণের চলাচল বাধাগ্রস্ত না করে সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে রাতের বেলা সংস্কার কাজ চালিয়ে যান চলাচলের ব্যাঘাত কমানো যেতে পারে। সেই সঙ্গে, প্রতিটি উন্নয়নকাজের তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করে জনগণকে অবহিত করা উচিত, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
খিলগাঁও ও বাসাবো শুধু আবাসিক এলাকা নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ও নানা প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু। তাই এসব এলাকার রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যদি জনগণের ভোগান্তি লাঘবে আন্তরিক হয়, তবে অবিলম্বে কাজ শুরু করে টেকসই ও পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। অন্যথায় জনগণের ক্ষোভ এবং ভোগান্তি কেবল বাড়তেই থাকবে।