ঈদ মানেই ফেরা—ভালোবাসার টানে গ্রামের পথে

ঈদকে ঘিরে গ্রামে ফেরার আকাঙ্ক্ষা যেন প্রতিবছরই নাগরিক জীবনে এক নতুন অনুভূতি জাগায়। শহরে কাজের চাপে ব্যস্ত মানুষজন মনে করেন, ঈদ শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়—বরং এটি হয়ে উঠেছে শিকড়ে ফেরার একটি শক্তিশালী উপলক্ষ।

বিভিন্ন যাত্রাপথে কথা বলে জানা যায়, জীবিকার তাগিদে শহরে আসা অনেকেই মনে করেন, কংক্রিটের খাঁচায় আটকে থেকেও মন পড়ে থাকে গ্রামের উঠোনে, মায়ের মুখে, বিকেলের রোদে। ঈদ এলে সেই টান যেন আরও গভীর হয়। কেউ কেউ বলেন, ঈদের আগে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু হলেই মনটা অন্যরকম আনন্দে ভরে ওঠে।

অনেকে জানান, একটি টিকিট পেয়ে যেন পৃথিবী জয় করার মতো আনন্দ হয়। বাস, ট্রেন, লঞ্চ—যেখানে জায়গা মেলে, সেখান থেকেই ছুটে চলেন তাঁরা গ্রামের পথে। তাঁদের মতে, ক্লান্ত শরীর হলেও ফেরা মানেই এক অদ্ভুত প্রশান্তি।

কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষারত একজন যাত্রী জানান, ট্রেনের জানালা দিয়ে শহরের আলো ফেলে রেখে সামনে গ্রামবাংলার সবুজ, নদী, মাঠ দেখে মনে হয়—এই তো নিজের পৃথিবী। তাঁর ভাষায়, ‘মন শুধু মায়ের মুখ খোঁজে, আর সেই চেনা উঠোনের গন্ধ খুঁজে বেড়ায়।’

কর্মজীবী নারী রাবেয়া আক্তার জানান, “ঈদ মানেই শৈশবে ফেরা, নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া। বাড়ি পৌঁছে মা যখন দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন, তখন সব কষ্ট ভুলে যাই।”

তবে অনেকেই আক্ষেপের সুরে জানান, সবাই সে সৌভাগ্য পান না। শহরে বহু মানুষই ঈদের সময় আটকে থাকেন দায়িত্বের চাপে। তাঁদের স্বপ্ন আটকে যায় ব্যস্ততার জালে। তবুও যারা ফিরতে পারেন, তাঁদের কাছে ঈদ মানেই জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার—নিজের মানুষ আর নিজের মাটি।

শহরের মানুষজনের মতে, ঈদ যেন এক বিশাল আবেগের নাম—যেখানে সবাই মিলে ছুটে চলেন একটাই লক্ষ্য নিয়ে। তারা চান, সবাই যেন নিরাপদে ও ভালোবাসায় ঘেরা একটি ঈদ কাটাতে পারেন।