
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে সমঝোতার উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার কিছু আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক ও সম্পূরক কর হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে কয়েকটি পণ্যে শুল্ক একেবারে প্রত্যাহার করা হয়েছে, আবার কিছু পণ্যে তা কমানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য আলোচনার প্রস্তুতি হিসেবে এবং রপ্তানিবান্ধব নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাজেট ঘোষণায় বলা হয়, ১১০টি আমদানি পণ্যের শুল্ক সম্পূর্ণ তুলে নেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি ৬৫টি পণ্যে শুল্ক কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক বাতিল এবং আরও ৪৪২টি পণ্যে এই কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টার মতে, এই পরিবর্তনের ফলে জনগণের ওপর শুল্ক ও করের বোঝা কিছুটা হালকা হবে এবং আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হবে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ, যা রপ্তানির তুলনায় আমদানিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া ‘রপ্তানিবিরোধী পক্ষপাত’ কমাতে সহায়তা করবে। ফলে দেশীয় পণ্যের রপ্তানি আরও উৎসাহিত হবে।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, যার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশি পণ্যের ওপরও। এসব পণ্যের ওপর শুল্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ শতাংশে। পরে, কিছুটা সমঝোতার লক্ষ্যে ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য এই পাল্টা শুল্ক স্থগিত করেন, যদিও ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক তখনও কার্যকর রাখা হয়।
এই ৯০ দিনের সময়সীমার মধ্যে অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসে, এবং বাংলাদেশও সেই আলোচনার অংশ হিসেবে বাজেটে শুল্কছাড়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাজেট বক্তব্যে সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বর্তমান ট্যারিফ ও ন্যূনতম মূল্য ব্যবস্থাকে ধাপে ধাপে যুক্তিসংগত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য বিদ্যমান সব শুল্কমূল্য বাতিল এবং ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করা হবে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও যুক্তিসঙ্গততা আনতে এটি একটি বড় পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন তিনি।