
এক সময় উচ্চ রক্তচাপকে বলা হতো “বয়স্কদের রোগ”। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ধারণা সম্পূর্ণ বদলে গেছে। এখন তরুণরাও ক্রমশ আক্রান্ত হচ্ছেন এই নীরব ঘাতকে। চিকিৎসকদের মতে, ৩০ বছরের নিচের তরুণদের মধ্যেও উচ্চ রক্তচাপের হার দ্রুত বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য এক ভয়াবহ সংকেত।
কিভাবে বুঝবেন আপনি উচ্চ রক্ত চাপে ভুগছেন?
অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপে ভোগা ব্যক্তিরা কোনো লক্ষণই অনুভব করেন না। কারও কারও ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা বা ঘাড়ে টান ধরার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি নীরবে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমনঃ হার্ট, কিডনি, মস্তিষ্ক ও রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ থেকে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় বহুগুনে, যা হতে পারে আকস্মিক মৃত্যুর কারণ।
কেন তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে এই সমস্যা ?
গবেষণা বলছে, তরুণদের উচ্চ রক্তচাপের পেছনে কাজ করছে জীবনযাপনের পরিবর্তন ও মানসিক চাপ। প্রধান কারণগুলো হলো—
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
লবণ, চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া
শরীরচর্চার অভাব, অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা
মানসিক চাপ, নিদ্রাহীনতা ও বিশ্রামের অভাব
ধূমপান ও মদ্যপান
পারিবারিক ইতিহাস বা জিনগত কারণ
কিছু ওষুধ যেমন ব্যথানাশক বা গর্ভনিরোধক ব্যবহারের প্রভাব
তরুণ বয়সে এই ঝুঁকিগুলো উপেক্ষা করলে পরবর্তী সময়ে হৃদরোগ, কিডনি বিকল হওয়া বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো জটিলতা তৈরি হতে পারে।
কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন উচ্চ রক্তচাপ?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, এখন থেকেই তরুণদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি—
দৈনন্দিন খাবারে লবণ, চর্বি ও চিনি কমানো
পর্যাপ্ত সবজি, ফলমূল ও শস্যজাতীয় খাবার গ্রহণ
নিয়মিত শরীরচর্চা ও হাঁটা
মানসিক চাপ কমানো ও পর্যাপ্ত ঘুম
ধূমপান, মদ্যপান ও নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা
নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা
চিকিৎসকদের মতে, সময়মতো রক্তচাপ মাপা এবং জীবনযাপনে ছোট ছোট পরিবর্তন আনলেই এই নীরব ঘাতককে প্রতিরোধ করা সম্ভব।