কোরবানির হাটে প্রতারিত হচ্ছেন কি?
ছবিঃ সংগৃহীত

ঈদুল আজহার আগে পশুর হাটে গরু কেনার ভিড় বাড়ছে। তবে অনেকেই কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা বা অসুস্থ গরু কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এবং হালাল ও সুস্থ পশু কোরবানি দিতে চাইলে আপনাকে গরু কেনার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। নিচে ধাপে ধাপে জানানো হলো কীভাবে বুঝবেন গরুটি ভালো ও সুস্থ কি না।

প্রথম ধাপে, গরুর চোখ ও নাক পর্যবেক্ষণ করুন। সুস্থ গরুর চোখ হবে উজ্জ্বল ও সচল, আর নাক থাকবে ভেজা বা আর্দ্র। যদি গরুর চোখ ক্লান্ত, বিবর্ণ বা নাক শুকনো দেখেন, তাহলে সেটি অসুস্থ হবার সম্ভাবনা থাকে।

এরপর লক্ষ্য করুন গরুর চলাফেরা ও প্রতিক্রিয়া। একটি সুস্থ গরু সব সময় সচল থাকে, দাঁড়িয়ে থাকে এবং কান বা লেজ নেড়ে মশা-মাছি তাড়ায়। অসুস্থ গরু সাধারণত ঝিমিয়ে থাকে বা শুয়ে পড়ে থাকে, যা সতর্ক সংকেত হতে পারে।

তৃতীয় ধাপে, গরুর খাওয়া ও জাবর কাটা পর্যবেক্ষণ করুন। সুস্থ গরু নিয়মিত খায় এবং জাবর কাটে, যা তার হজম প্রক্রিয়ার স্বাভাবিকতা বোঝায়। যেসব গরু খেতে চায় না বা জাবর কাটে না, তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারে।

চতুর্থ ধাপে, গরুর চামড়া ও পশম দেখে নিন। সুস্থ গরুর গায়ের পশম হবে মসৃণ ও উজ্জ্বল। চামড়া হবে দাগমুক্ত এবং টানটান। যদি চামড়ার নিচে হাত চাপলে গর্ত হয় এবং তা সহজে স্বাভাবিক অবস্থায় না ফেরে, তবে সেটি স্টেরয়েড বা পানি পুশ করার লক্ষণ হতে পারে।

পঞ্চম ধাপে, গরুর শ্বাস-প্রশ্বাস ও মুখ থেকে লালা নির্গত হচ্ছে কি না তা খেয়াল করুন। সুস্থ গরুর শ্বাস হবে নিয়মিত ও স্বাভাবিক। যদি দেখেন গরু হাঁপাচ্ছে, দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে বা অতিরিক্ত ফেনাযুক্ত লালা পড়ছে, তাহলে সেটি অসুস্থতার লক্ষণ।

তারপর দেখুন গরুর পা বা রানের অংশ। রাসায়নিক ব্যবহার করে মোটাতাজা করা গরুর রানের মাংস সাধারণত থলথলে বা নরম হয়। সুস্থ গরুর মাংস হবে টানটান ও শক্ত।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো গর্ভবতী গাভী কিনে ফেলা থেকে বিরত থাকা। এটি ধর্মীয়ভাবেও গ্রহণযোগ্য নয় এবং অনৈতিক।

সবশেষে, গরুর শিং, লেজ, জিহ্বা, মুখ ও ক্ষুর খুঁটিয়ে দেখুন। কোনো অস্বাভাবিকতা, ক্ষত বা সংক্রমণ থাকলে সেই গরু না কেনাই ভালো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনের আলোতে গরু কেনা নিরাপদ এবং সম্ভব হলে একজন পশু চিকিৎসক বা অভিজ্ঞ কাউকে সঙ্গে নিয়ে হাটে যাওয়াই ভালো। গরুর বয়স কমপক্ষে দুই বছর হওয়া উচিত এবং তার দাঁত দেখে এই বয়স যাচাই করা যায়।

সতর্কতার সঙ্গে গরু কিনলে ঠকার ঝুঁকি কমে যায় এবং আপনি সুস্থ ও হালাল পশু দিয়ে কোরবানির কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।