কাহাফ পাঠের দিন আজ
ছবিঃ সংগৃহীত

মুসলমানদের কাছে জুমার দিন শুধু একটি দিন নয় এটি রহমত, বরকত ও নাজাতের দিন। হাদিসে একে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে। আর এই দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো সূরা কাহাফ তেলাওয়াত।



পবিত্র কোরআনের ১৮তম সূরা হলো আল কাহাফ—অর্থাৎ গুহা। এ সূরায় চারটি ঘটনা, চারটি বক্তব্য ও উপদেশ স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আসহাবে কাহাফের ঘটনা।


অবিশ্বাসে ভরা সমাজে কয়েকজন যুবক সত্য ধর্মের প্রতি ইমান এনেছিলেন। বিরূপ পরিস্থিতির কারণে তাঁরা এক গুহায় আশ্রয় নিলেন। আল্লাহ তাঁদের দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘুম পাড়িয়ে রাখলেন।


যখন তাঁদের ঘুম ভাঙল, তাঁরা বুঝতেই পারলেন না কত বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। খাবার সংগ্রহের জন্য একজন শহরে গেলে তাঁর পুরোনো মুদ্রা দেখে লোকেরা বিস্মিত হলো। এ ঘটনা প্রমাণ করে, আল্লাহ তাঁর ইমানদার বান্দাদের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও অদ্ভুতভাবে রক্ষা করেন।


সূরা কাহাফে ১–৮ আয়াতে রয়েছে বক্তব্য ও উপদেশ।


৯–২৬ আয়াতে আসহাবে কাহাফের ঘটনা।


৩২–৪৪ আয়াতে দুটি বাগানের মালিকের কাহিনি।


৬০–৮২ আয়াতে মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর ঘটনা।


৮৩–১০১ আয়াতে জুলকারনাইনের কাহিনি।


শেষে আবার উপদেশ ও সতর্কবার্তা।



মোট ১১০ আয়াতবিশিষ্ট এই সূরার প্রতিটি অংশেই রয়েছে ঈমান, কৃতজ্ঞতা, তাওয়াক্কুল ও আল্লাহর ওপর ভরসার শক্ত বার্তা।



রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

“যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত নূর বর্ষিত হবে।” (আবু সাঈদ খুদরি রা.)


আবার অন্য হাদিসে এসেছে, “যে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য এমন নূর সৃষ্টি হবে যা তার অবস্থান থেকে মক্কা পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে।”



এমনকি জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করলে দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে বলেও বর্ণিত হয়েছে।



হাদিস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় সূরা কাহাফ পাঠ করা যায়। এটি এক বৈঠকে পড়া জরুরি নয়; বরং একাধিক বৈঠকে ভাগ ভাগ করে পড়লেও একই সওয়াব লাভ হবে, ইনশাআল্লাহ।


সূরা কাহাফের ঘটনা আমাদের শেখায়, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখলে তিনি সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি থেকেও মুক্তির পথ তৈরি করেন। তাই জুমার দিনে এই সূরার তেলাওয়াত শুধু সওয়াবই নয়, বরং আল্লাহর রহমত, নূর ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে সুরক্ষার অঙ্গীকার বয়ে আনে।