
ডাক্তারের প্রাথমিক ফি দেওয়ার পর রিপোর্ট দেখাতে আবার টাকা নেওয়ায় রোগীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রোগীদের অভিযোগ, প্রথমবার ডাক্তার দেখানোর সময়ই পরীক্ষার পরামর্শ ও চিকিৎসা পরিকল্পনার জন্য পুরো ফি নেওয়া হয়। কিন্তু রিপোর্ট হাতে নিয়ে ফের গেলে শুধুমাত্র দেখানোর জন্য সমপরিমাণ বা আংশিক ফি নেওয়া অন্যায্য এবং অযৌক্তিক।
রাজধানীর ধানমন্ডির এক রোগী বলেন, “এটা যেন এক ধরনের লুকানো খরচ। রিপোর্ট তো ডাক্তারই লিখে দিয়েছেন, এখন সেটা দেখাতে আবার টাকা কেন? এই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য অনেকেরই নেই।” শুধু রাজধানী নয়, বিভিন্ন জেলা-উপজেলাতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। এক স্কুলশিক্ষক জানান, ডাক্তার ফি ৫০০–১,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়, তার সাথে রিপোর্ট দেখানোর সময় অতিরিক্ত ৩০০–৫০০ টাকা দিতে হলে সাধারণ মানুষের জন্য তা কষ্টকর।
স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিপোর্ট দেখানো চিকিৎসা সেবার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটিকে আলাদা সেবা হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। প্রাথমিক ফি’র মধ্যেই রিপোর্ট দেখানো অন্তর্ভুক্ত করা হলে রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না এবং চিকিৎসক–রোগী সম্পর্কও সুদৃঢ় থাকবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো একক নীতিমালা নেই। ফলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো নিজস্ব নিয়মে ফি নির্ধারণ করছে। তাদের মতে, সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করে রিপোর্ট দেখানো বিনামূল্যে বা নামমাত্র খরচে করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোগীরা দাবি করেছেন, রিপোর্ট দেখানো প্রাথমিক ফি’র মধ্যে রাখতে হবে, স্বচ্ছ ফি কাঠামো প্রকাশ করতে হবে এবং সরকারি পর্যায়ে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। সচেতন মহলের মতে, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার; অতিরিক্ত খরচের বোঝা রোগীর কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক। এখনই নীতিগত পরিবর্তন না হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।