ঢাবিতে হাদির শেষ বিদায়, নজরুল সমাধি চত্বরে ছাত্র-জনতার ঢল
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সমাধি চত্বরে আজ এক ভিন্ন আবহ। এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার প্রস্তুতি চলছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। শেষ বিদায়ের সেই মুহূর্তের সাক্ষী হতে ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা ছাত্র-জনতা সমবেত হয়েছেন কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের সমাধিস্থলের বাইরে।


বেলা যত গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে মানুষের ঢল। কেউ নীরবে দাঁড়িয়ে আছেন, কেউ আবার মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছেন—এই সময়টুকু যেন স্মৃতিতে ধরে রাখতে চান সবাই। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে হাদির জীবন, তার সংগ্রাম আর রাজপথের গল্প নিয়ে আলোচনা করছেন উপস্থিত অনেকেই। কথার ফাঁকে ফাঁকে শোনা যাচ্ছে দীর্ঘশ্বাস, কোথাও আবার চোখের কোণে জমে উঠছে অশ্রু।


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। সংকটাপন্ন অবস্থায় প্রথমে ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে।


সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তার জীবনাবসান ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায়।


ঢাকা-৮ আসন থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। জুলাই আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে আপসহীন বক্তব্য তাকে ছাত্র-জনতার কাছে আলাদা পরিচিতি এনে দেয়। সমর্থকদের চোখে তিনি ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, সাহসী এক রাজনৈতিক প্রতীক।


আজ সেই কণ্ঠস্বর চিরতরে থেমে গেলেও, নজরুলের সমাধি চত্বরে জড়ো হওয়া মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে তার নাম। অপেক্ষা আর স্মৃতির ভেতর দিয়েই যেন শেষবারের মতো তারা বিদায় জানাচ্ছেন একজন শহীদ নেতাকে।