জেনে নিন ইগো কমানোর কার্যকর উপায়
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
কথা বলতে গেলে অনেকেই মনে করেন ‘আমি ঠিক আছি, অন্যরাই ভুল’। কিন্তু এই ভাবনাটিই ধীরে ধীরে তৈরি করে এক অদৃশ্য দেয়াল, যার নাম ইগো। ছোট্ট এই শব্দের ভেতর লুকিয়ে আছে বিশাল মানসিক অশান্তির কারণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইগো বা অহংবোধ আমাদের মানসিক প্রশান্তি নষ্ট করে। এটি নিয়ন্ত্রণে না রাখলে মানুষ নিজেকে সব সময় অন্যদের সঙ্গে তুলনা করতে থাকে এবং অন্যদের তুচ্ছ করতে শুরু করে, হারিয়ে ফেলে বিনয় ও মমতা।

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইগো নিয়ন্ত্রণ করলে আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি শক্ত হয়, আর মানুষ হয়ে ওঠে নম্র, নির্ভরযোগ্য ও শান্ত মনের অধিকারী।


কোন বিষয়গুলো ইগো বাড়িয়ে দেয়? কীভাবেই বা জন্ম নেয় ইগো? বিশেষজ্ঞদের মতে, ইগো বেড়ে যায় যখন মানুষ অন্যের সঙ্গে তুলনা করে, নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতে চায় বা আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। ছোটখাট মন্তব্যে রেগে যাওয়া বা নিজের সাফল্যে অতিরিক্ত গর্বিত হওয়াও ইগো বাড়িয়ে দেয়।

কিভাবে কমাবেন ইগো? জেনে নিন ইগো কমানোর কার্যকর কয়েকটি উপায়:

১. শেখার মানসিকতা বজায় রাখা:
ইগো দমন করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিজের শেখার আগ্রহ ধরে রাখা। মনে রাখা, শেখার কোন শেষ নেই। নিজের ভুল স্বীকার করতে শেখা ইগো কমায়।

২. অন্যদের সেবায় মন দেওয়া:
নিজের জন্য নয়, অন্যদের উপকারে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে অহংবোধ কমে আসে। প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করা— কাউকে সাহায্য করা, প্রশংসা করা বা ইতিবাচক কথা বলা—মনকে শান্ত রাখে।

৩. মননশীলতা বা মাইন্ডফুলনেস:
নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়ার ওপর সচেতন থাকা ইগো নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি মানুষকে তুলনামূলক মানসিকতার বাইরে নিয়ে আসে। তখন ধীরে কথা বলা এবং বোঝাপড়া বেছে নেওয়া সহজ হয়।

৪. নিজের উদ্দেশ্যের দিকে নজর রাখা:
নিজেকে প্রশ্ন করুন, “আমি কীসের জন্য কাজ করছি—প্রশংসা পেতে নাকি নিজের সেরাটা দিতে?” কাজের উদ্দেশ্য যদি আত্মউন্নয়ন হয়, তাহলে বাইরের প্রশংসা বা সমালোচনা প্রভাব ফেলতে পারে না।

ইগো বা অহংবোধ নিঃশব্দে মানুষের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে। তবে সচেতনতা, শেখার মনোভাব এবং অন্যের প্রতি সহমর্মিতা চর্চা করলে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, “যে মানুষ নিজেকে বিনয়ী রাখতে পারে, সেই নিজের ভেতরের শান্তিকে সবচেয়ে বেশি রক্ষা করতে পারে।”