
যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এমন একটি ড্রোন ডিজাইন করছেন যা দ্রুত ও দীর্ঘক্ষণ নিরব হিসেবে আকাশে ভেসে থাকতে পারে—ইতিহাসের সর্বান্ত প্রযুক্তিকে অ্যালবাট্রস পাখির শৈলী অনুশীলন করিয়ে।
অ্যালবাট্রস পৃথিবীর বৃহত্তম উড়ন্ত পাখিদের মধ্যে একটি, যার ডানার দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ ফুট, আর জীবনকালের অধিকাংশ সময়ই বাতাসে ভেসে কাটে। এই পাখি মায়াবীভাবে ঝাঁকুনি ছাড়া, ডানার স্পন্দন ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওড়ে।
প্রাকৃতিকভাবে তারা যেভাবে বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, মাধ্যাকর্ষণ ও বায়ুর গতিকে কাজে লাগিয়ে শক্তির ব্যবহার নিজেকে সামুলেভাবে পরিচালনা করে, সেটি একটি বিস্ময়কর প্রশিক্ষণ; সেই নীতিকে মানব তৈরি ড্রোনে প্রয়োগ করার সাফল্যবীজ এই গবেষণা।
এই প্রজেক্টের নেতৃত্বে আছেন সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সামেহ আইসা, যিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সির (ডারপা)-এর ৭০ লাখ ডলার মুল্যের অনুদান পেয়েছেন। তাঁদের অভিপ্রায়: আলবাট্রসের মতো “dynamic soaring” নামে পরিচিত নিরব, শক্তিসাশ্রয়ী ও বাস্তব সময়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ উড়ান কৌশল নতুন প্রজন্মের ড্রোনে বাস্তবায়ন করা।
অ্যালবাট্রস পাখি বাতাসে ভেসে উঠতে প্রথমে “পাল তোলা নৌকা” মত বাতাসের সঙ্গে তার ডানে বাঁটিয়ে ওঠে—ধীরে ধীরে উচ্চতায় উঠে—তারপর বাতাস ও মাধ্যাকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে নিচ নেমে আবার উপরে উঠে। এই পুনরাবৃত্ত প্রক্রিয়ায় প্রতি একটিবারেই শক্তি শূন্যে উড়ে যাওয়ার মতো সমতলে চলে চলে, আর তারই জন্য ড্রোনেও ‘natural extremum-seeking system’ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণ করে pitch, yaw, roll এবং গতি, যেন সর্বোচ্চ শক্তিসাশ্রয় করতে পারে।
অদ্ভুত হলেও সত্য—এই পাখির নাক তাদের বাতাসের গতি ও দিক সনাক্ত করতে সহায়তা করে। সেই সংবেদনশীল নাকের মতোai সিন্সের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ড্রোনকে বাস্তব সময়ে বাতাসের বদল বুঝিয়ে সামঞ্জস্য করতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। আইসা বলেন, অ্যালবাট্রসরা যে জটিল ও বহু-বোঝার অপটিমাইজেশন সমস্যা সমাধান করে, তা একটি সহজ কাজ নয়—কয়েক সেকেন্ডের তথ্য তৈরি করতে আধুনিক কম্পিউটারে শত সেকেন্ড লাগলেও, পাখিরা তা বাস্তব-সময়ে নিখুঁতভাবে করে থাকে—যা অবিশ্বাস্য, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে সৈকতের বাতাসকে শত্রু নয়, বরং শক্তির উৎসে পরিণত করা হচ্ছে। নতুন Flight control সিস্টেমের মাধ্যমে গতি, অভিযোজকতা ও শক্তি ব্যবহারে অতুলনীয় দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে তাঁরা পরীক্ষা করছে, কখনো conventional flight এর থেকে কতটুকু শক্তি সাশ্রয় হয়।
সামগ্রিকভাবে, এই গবেষণা শুধুই রোবট নয়; এটি প্রকৃতির পরিকল্পনাকে মানব সৃষ্টিতে পরিণত করার যাত্রা। জীবনের মতো বাস্তব সময়ে অনুকরণীয় Flight করানো সম্ভব হলে ড্রোনের কাজে দূরদর্শিতা ও শক্তিসাশ্রয়ে বিপ্লব আনতে পারে—ডারপা অনুদানসহ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন অধ্যায়ের সূচনা এখানে হয়েছে।