ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের সব বিভাগের বিভিন্ন আসনে ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে রাজনৈতিক দল গুলো। যার মধ্যে দুই দফায় ২৭২ টি আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী মোট ২৯৭ টি আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। পিছিয়ে নেই এনসিপি ও। প্রথম দফায় ১২৫ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আরও দুই দফায় নাম ঘোষণা করে ৩০০ আসনে প্রার্থী পূর্ণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এ সময় দলটির শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনী আসনের তালিকাও প্রকাশ করা হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক ময়দানে নতুন শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যেখানে দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব হাতে নেন আখতার হোসেন।
এছাড়া দলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বাইরেও এই দলের শীর্ষ আটটি পদ তৈরি করা হয়। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান সামান্তা শারমীন ও আরিফুল ইসলাম আদীব; জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা; মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে জায়গা পান নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী ও যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব নেন আবদুল হান্নান মাসউদ। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠকের দায়িত্ব পান হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠকের দায়িত্ব পান সারজিস আলম।
নির্বাচন ঘিরে এনসিপি প্রকাশিত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী দলটির শীর্ষ নেতারা যেসব আসনে লড়বেন, সেখানে তাদের বিপরীতে রয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর হেভিওয়েট প্রার্থীরাও।
চলুন জেনে নিই নির্বাচনী দল গুলোর প্রকাশিত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী যারা থাকছেন একই আসনে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের বিপরীতেঃ
ঢাকা-১১: বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা নিয়ে গঠিত এই আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। যার বিপরীতে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে লড়বেন এম এ কাইয়ুম এবং জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।
রংপুর-৪: এই আসন থেকে এনসিপির হয়ে লড়বেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন। যেখানে বিএনপির পক্ষ লড়বেন রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কাউনিয়া উপজেলার আহ্বায়ক মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা। সেইসাথে জামায়াতের হয়ে লড়বেন এ টি এম আজম খান।
ঢাকা-১৬: এই আসনে এনসিপির হয়ে লড়বেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। এখানে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক এবং জামায়াতের প্রার্থী কর্নেল (অব.) আব্দুল বাতেন।
ঢাকা-৯: এই আসনে নির্বাচনের মাঠে দেখা যাবে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারাকে। যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ এবং জামায়াতের প্রার্থী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমেদ।
ঢাকা-১২: এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা এই আসনের প্রার্থী। তাঁর বিপরীতে বিএনপির হয়ে লড়বেন যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব এবং জামায়াতের প্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন।
ঢাকা-১৮: এই আসনে লড়বেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। বিপরীতে এই একই আসনে বিএনপির হয়ে মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন এবং জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক।
পঞ্চগড়-১: এই আসনে এনসিপির হয়ে লড়বেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এই আসনে তার প্রতিপক্ষ বিএনপি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির। জামায়াতের প্রার্থী জেলা আমির ও তেঁতুলিয়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসাইন।
কুমিল্লা-৪: এই আসনে লড়বেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাঁর বিপরীতে বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী এবং জামায়াতের প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা সেক্রেটারি ও দেবিদ্বারের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম।

