সর্ববৃহৎ কৃষি খামারে কাটানো একটি স্বর্ণালি দিন
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
ইট-পাথরের যান্ত্রিক শহরে ক্লান্তি কাটাতে ভ্রমণ সবসময়ই একটি ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। ভ্রমণ শুধু নতুন স্থান আবিষ্কারই নয়, বরং মনের ভেতর নতুন আলো ও উদ্যমের সঞ্চার করে। এমনই এক অভিজ্ঞতা হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত সফরে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা ঘুরে দেখেছেন এশিয়ার বৃহৎ কৃষি খামার দত্তনগর কৃষি প্রকল্প ও ঐতিহাসিক বলুহর বাওড়।


ভ্রমণের শুরুতে অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হয় ফুটবল ও খেলাধুলার পোশাক আনতে নির্দেশনা। তবে অন্যান্য সদস্যরা খেলায় অংশ নিতে রাজি না হওয়ায় কার্যক্রমটি বাতিল হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অপেক্ষার পর গাড়ি কুহেলিকা করে যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল, এরপর গড়াই বাসে কালীগঞ্জ এবং পরে শাপলা এক্সপ্রেসে হাসাদাহ বাজারে পৌঁছানো হয়। 


দীর্ঘ যাত্রায় অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়লেও দত্তনগর কৃষি খামারের কথা শুনে সবার মাঝে নতুন উদ্যম ফিরে আসে। হাসাদাহ বাজার থেকে ইজিবাইকে গ্রামের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে যাত্রীরা পৌঁছান দত্তনগরে। রাস্তার দুই পাশে খেজুর ও পাম ওয়েলের সারি, বিস্তীর্ণ ধানের জমি, আর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে।


দত্তনগর কৃষি প্রকল্প এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বীজ উৎপাদন কেন্দ্র ও গবেষণা খামার। প্রায় তিন হাজার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই খামার থেকে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বীজ রপ্তানি করা হয়। 


দত্তনগর ভ্রমণের পর সফরসঙ্গীরা যান কুশডাঙ্গা বটতলায়। প্রায় ৫০০ বছর পুরোনো এই বটগাছ স্থানীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী। এখানে আড্ডা, গান আর আনন্দঘন মুহূর্তে ভরে ওঠে ভ্রমণকারীদের সময়।


পরে সবাই যাত্রা করেন বলুহর বাওড়ের উদ্দেশে। দুপুরের খাবার শেষে সাউন্ড বক্সযুক্ত ইজিবাইকে গান শুনতে শুনতে পৌঁছে যায় দলটি। বাওড়ে গিয়ে নৌকাভ্রমণ ছিল সফরের অন্যতম আকর্ষণ। দুইটি নৌকায় চড়ে সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করেন ভ্রমণকারীরা।


ভ্রমণের শেষ প্রহরে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও আলোচনা সভার মাধ্যমে সফরের সমাপ্তি ঘটে। এরপর সকলে ফিরে আসেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এই ভ্রমণ শুধু একটি দিনের আনন্দই নয়, বরং অংশগ্রহণকারীদের কাছে হয়ে থাকবে আজীবন স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।