
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
শরৎ এসেছে প্রকৃতিতে। নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, ভোরে ঝরে পড়া শিউলি ফুলের গন্ধ আর ধানের শীষে সোনালি আভা জানান দিচ্ছে ঋতুর আগমন। তবে শরতের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্যের প্রতীক কাশফুল এখন ঢাকার চারপাশের মাঠে, খালে আর নদীর তীরে শুভ্র রূপ ছড়িয়ে দিয়েছে।
পোস্তগোলা সেতু পার হয়ে সারিঘাট রোডে গেলে চোখে পড়বে দিগন্তজোড়া কাশফুল। যেন শুভ্র রঙের সমুদ্র। খালের ধার ঘেঁষে বেড়ে ওঠা কাশফুল আর স্বচ্ছ পানির খাল মিলিয়ে সেখানে তৈরি হয়েছে স্বর্গীয় আবহ। রঙিন নৌকায় ঘুরে বেড়ায় দর্শনার্থীরা, ছবি তোলে, প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়।
উত্তরার দিয়াবাড়ীর প্লটগুলো এখন কাশফুলে ভরে গেছে। মেট্রোরেলের ‘উত্তরা সেন্টার স্টেশন’ থেকে নেমে কিছুটা এগোলেই দেখা মিলবে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের। নগরের যান্ত্রিকতা থেকে একটু মুক্তি পেতে অনেকেই পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের নিয়ে ছুটে যান এখানে। কাশফুল দেখতে দেখতে পাশের বউবাজারে থেমে নানা পদের খাবার—হাঁসের মাংস, কালাভুনা, পিঠা, ফুচকা আর চা-নাস্তার আয়োজনও উপভোগ করেন অনেকে।
আফতাবনগর হাউজিং, রামপুরা খাল, ৩০০ ফিট সড়ক, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর, বছিলা ও মধুসিটি—সব জায়গাতেই এখন কাশফুলের সাদা চাদর। পরিবার-পরিজন নিয়ে কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ নৌকায় ঘুরছেন, আবার কেউ শান্তভাবে বসে শরতের হাওয়া উপভোগ করছেন।
কাশফুল মূলত ছন গোত্রের বহুবর্ষজীবী ঘাস। উচ্চতা তিন থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত হয়। নদ-নদীর পাড়ে পলিমাটির স্তর থাকায় এরা সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। কচি ছন গবাদি পশুর খাবার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
বাংলার ষড়ঋতুর মধ্যে শরৎ এক বিশেষ ঋতু। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে ভ্যাপসা গরম কমে গিয়ে আসে স্নিগ্ধ হাওয়া, আর কাশফুলের শুভ্র হাসি জানান দেয়—শীতের অপেক্ষা আর বেশি নয়। তাই কাশফুল আর শরৎ যেন একে অপরের পরিপূরক।