জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিতে নিহত রাইসার নাম নেই সরকারি তালিকায়
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজপথে নেমেছিল লাখ  লাখ মানুষ। পুলিশি গুলিতে প্রাণ হারায় শিশুসহ বহু মানুষ। গত বছরের ২০ জুলাই সাত বছরের শিশু রাইসা সেই আন্দোলনের এক শহীদ। তবে এখনও তার নাম সরকারি ‘জুলাই শহীদদের’ তালিকায় স্থান পায়নি।


নিহত রাইসা কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মধ্য পুরুড়া গ্রামের মো. বাবু চান মিয়ার কন্যা। একদিকে সন্তান হারানোর শোক, অন্যদিকে দারিদ্র্য, পরিবারের জীবন অতিষ্ঠ। জরাজীর্ণ বাড়িতে বসবাস করছেন তারা, বৃষ্টি হলেই টিনের ফাঁক দিয়ে পানি ঢুকে শরীর ভিজে যায়। দীর্ঘদিন পর পিতামাতা ঢাকার ভাড়া বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।


নিহতের বাবা বাবু চান মিয়া জানান, তারা পূর্বে রাজধানীর তারাব বিশ্বরোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ২০২৪ সালের ২০ জুলাই সকাল ১১টার দিকে রাইসা বাসার গেটের সামনে খেলছিল। হঠাৎ আকাশে হেলিকপ্টার ও রাস্তায় গুলির শব্দ শুনে পরিবারের সদস্যরা দৌড়ে আসেন এবং দেখতে পান রাইসার বুকে গুলি লেগে রক্ত ঝরছে। তাকে ঢাকার বিভিন্ন মেডিকেলে নেওয়া হলেও চিকিৎসা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।


বাবুচান মিয়া অভিযোগ করেন, প্রথমে হাসপাতালের লোকজন রাইসার মরদেহ হস্তান্তর করতে চান নায় এবং লাশ ‘নর্দমায় ফেলে’ দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে খোঁজ পাওয়ার পর একটি রুম থেকে বহু মৃতদেহের সঙ্গে রাইসার লাশ উদ্ধার হয়। পুলিশের চাপ ও স্থানীয় ক্ষমতাশীল ব্যক্তিদের প্রভাবের কারণে রাত এক টার দিকে কটিয়াদী গ্রামের বাড়িতে দ্রুত দাফন করতে বাধ্য হন পরিবার।


কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগেই কেউ তাদেরকে তথ্য দেয়নি। তথ্য পাওয়া পর তিনি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছেন। শীঘ্রই রাইসার নাম সরকারি ‘জুলাই শহীদদের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়া পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।