৩৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কই আক্রান্ত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর তত্থ্যমতে,  এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থাৎ ৩৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কই এ দুই অসংক্রামক রোগে ভুগছেন।


রোববার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে বিআইডিএসের বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে এই গবেষণা উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী ও জনসংখ্যা অধ্যয়ন বিভাগের প্রধান আব্দুর রাজ্জাক সরকার।

বাংলাদেশ জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা (বিডিএইচএস) ২০২২ এর ১৩,৯৬০ জন ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী অংশগ্রহণকারীর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে উচ্চ রক্তচাপের প্রাদুর্ভাব ২০.৪৭ শতাংশ, ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব ১৫.৬৫ শতাংশ আর প্রি–ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৩২.৬ শতাংশ

গবেষকদের মতে, অসংক্রামক রোগ এখন শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।


যারা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে?


তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৫০ বছর ঊর্ধ্বে উচ্চ রক্তচাপ: ৩৯.৩৮%, আনুষ্ঠানিক শিক্ষাহীনদের মধ্যে: ২৯.৫৩%, অতিরিক্ত ওজনধারী ব্যক্তিদের মধ্যে: ৩১.২৪%

ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও একই ধারা, ৫০ বছর ঊর্ধ্বে: ২২.৯২%, অতিরিক্ত ওজনধারী: ২২.১৭%, উচ্চ রক্তচাপ থাকা রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিস: ২৫.১%

তবে, শহরাঞ্চল ও উচ্চ আয়ের মানুষের মধ্যে হার তুলনামূলক বেশি। জেলা পর্যায়ে দেখা গেছে, দিনাজপুরে ডায়াবেটিস এবং সিলেটে উচ্চ রক্তচাপের হার সর্বোচ্চ।


জনস্বাস্থ্যে বাড়তি চাপের আশঙ্কা


বিআইডিএস জানায়, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ক্রমবর্ধমান হার দেশের জন্য গুরুতর জনস্বাস্থ্যঝুঁকি। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে রোগের বোঝা আরও বাড়বে।


নীতি–সুপারিশ


গবেষণায় তিন স্তরের সমন্বিত কৌশল জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই তিনটি প্রতিরোধ, সময়মতো শনাক্তকরণ ও সমন্বিত চিকিৎসা।

এ ছাড়া সুপারিশ করা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে রোগ শনাক্তকরণ জোরদার, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি, কমিউনিটি পর্যায়ে সাশ্রয়ী ও ধারাবাহিক সেবা নিশ্চিত করা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় অসংক্রামক রোগের সেবা সমন্বিতভাবে যুক্ত করা।

গবেষকরা বলছেন, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।