দিল্লি-ইসলামাবাদ বিস্ফোরণ: দোষারোপে উত্তপ্ত দক্ষিণ এশিয়া
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ও পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে টানা দুই দিনে ভয়াবহ দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় আবারও চরম উত্তেজনায় দক্ষিণ এশিয়া।


সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন, আহত ২০ জনের বেশি। দিল্লি পুলিশের কমিশনার সতীশ গোলচা জানিয়েছেন,সিগন্যালে থেমে থাকা এক গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় আশপাশের কয়েকটি যানবাহন।


যদিও এ ঘটনায় ভারত এখনো অবধি আনুষ্ঠানিকভাবে কারও ওপর দায় চাপায়নি, তবু সন্দেহের তীর ঘুরছে সীমান্তের ওপারেই। পূর্বনির্ধারিত ভুটান সফর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, “ষড়যন্ত্রের মূল পর্যন্ত যাওয়া হবে, অপরাধীরা ছাড় পাবে না।”


অন্যদিকে পাকিস্তান বলছে, এ ঘটনায় ভারত শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদকেই দায়ী করবে, আর এমন আশঙ্কা তাদের আগে থেকেই ছিল।


কিন্তু দিল্লি বিস্ফোরণের মাত্র ২৪ ঘণ্টা পরই, মঙ্গলবার দুপুরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আদালত ভবনের সামনে ঘটে আরেক বিস্ফোরণ। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি জানিয়েছেন, এক আত্মঘাতী হামলাকারী পুলিশের গাড়ির পাশে বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ১২ জন, আহত ৩০ জনের বেশি। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে জামা-উল-আহরার নামের গোষ্ঠী।


পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সরাসরি ভারতকে দায়ী উল্লেখ করে বলেছেন, “ভারতের প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর মদদেই এই হামলা।” জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের এ অভিযোগকে “ভিত্তিহীন ও অমূলক” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।


বিশ্লেষকদের মতে, মাত্র ছয় মাস আগের সংঘাতের পর ফের এই দুই বিস্ফোরণ দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলছেন, “দিল্লি ও ইসলামাবাদের মতো শহরে এই ধরণের বিস্ফোরণ অত্যন্ত অস্বাভাবিক, যা গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ঝুঁকির ইঙ্গিত দিচ্ছে।”


এদিকে ইসলামাবাদে হামলার পর পাকিস্তান এখন “যুদ্ধাবস্থায়” আছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই পারস্পরিক অভিযোগ দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন সংঘাতের দ্বারও খুলে দিতে পারে।



দিল্লি-ইসলামাবাদ বিস্ফোরণ এখন শুধু দুই দেশের নয়, পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে।