
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জিলহজ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে পবিত্র হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোকন—আরাফাতের ময়দানে অবস্থান। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ১৫ লাখ হজযাত্রীর কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে—‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’। বিশাল মরুপ্রান্তর আরাফাত ময়দান এখন এক বিশুদ্ধ আধ্যাত্মিক পরিবেশে পরিণত হয়েছে।
সকাল থেকেই দলে দলে হাজিরা মিনা থেকে আরাফাতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। সেখানে পৌঁছে তাঁরা জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর জিকির, দোয়া ও ইবাদতে মগ্ন থাকবেন। এদিন আরাফাতে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা, যা ছাড়া হজ পূর্ণ হয় না।
আরাফাতের ময়দানে আজ খুতবা প্রদান করছেন মসজিদুল হারামের খতিব ও সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে মসজিদে নামিরা থেকে খুতবা সম্প্রচার করা হচ্ছে ৩৪টি ভাষায়, যার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে। ষষ্ঠবারের মতো বাংলায় খুতবার অনুবাদ উপস্থাপন করছেন ড. মুহাম্মদ খলীলুর রহমান।
আরাফাতে অবস্থানের পর সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে হাজিরা মুজদালিফার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করে রাত যাপন করবেন এবং শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য কংকর সংগ্রহ করবেন।
১০ জিলহজ মিনায় গিয়ে হাজীগণ বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করবেন, পশু কোরবানি দেবেন, মাথা ন্যাড়া করবেন এবং তাওয়াফে জিয়ারতের মাধ্যমে হজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সমাপ্ত করবেন।
এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে বাকি দুই জামারায় পাথর নিক্ষেপ করবেন। কেউ কেউ ১৩ জিলহজ পর্যন্ত অবস্থান করবেন। হজের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে হজ সম্পন্ন করবেন হাজিরা।
মুসলিম উম্মাহর জন্য এই দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের সময় আরাফাতের ময়দানেই ঘোষণা করেছিলেন— “আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বীন পূর্ণ করলাম, তোমাদের ওপর আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।” (সূরা মায়েদা, আয়াত ৩)
বিশ্বের শতাধিক দেশের লাখ লাখ মুসলমানের একত্রিত হওয়া ও আল্লাহর দরবারে কান্নাজড়ানো প্রার্থনা বিশ্বশান্তি, সংহতি ও ঐক্যের অনন্য নিদর্শন বহন করে।