বারুদের আগুনে জ্বলছে মধ্যপ্রাচ্যঃ ইরান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রও দায়ী
ছবিঃ সংগৃহীত

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত — জাতিসংঘে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে ইরান।

ইরানের জাতিসংঘ প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, “ইসরায়েলের হামলায় ওয়াশিংটনের জড়িত থাকা সন্দেহাতীত। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ও অনুমোদনের মাধ্যমেই এই হামলা হয়েছে।”

তবে যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ইসরায়েলের পরিকল্পনা সম্পর্কে আগে থেকেই জানত, কিন্তু কোনো সামরিক সহায়তা দেয়নি।

এর আগে গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। জবাবে, ইরান ‘ট্রু প্রমিস থ্রি’ নামে পাল্টা আক্রমণে নামে—টার্গেট করে ইসরায়েলের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনাগুলো।

ইরান জানিয়েছে, তারা ১০০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল দাবি করছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।

তেল আবিবের রামাত জান এলাকায় রকেট হামলায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। ইসরায়েলের জাতীয় অ্যাম্বুলেন্স সংস্থা ‘মাগেন ডেভিড অ্যাডম’ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৭৮ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৩২০ জন। নিহতদের মধ্যে একাধিক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এবং অধিকাংশ আহতই বেসামরিক নাগরিক।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি আগেই জানতেন। তিনি জানান, ইরানকে ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন, যা ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।

ট্রাম্পের ভাষায়, “আমি ইসরায়েলকে প্রথমে হামলা স্থগিত রাখতে বলেছিলাম, যেন আলোচনার সুযোগ থাকে। তবে এখন আমি ইসরায়েলের পাশেই আছি।”

আগামী রোববার ওমানে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক হামলা-পাল্টা হামলার কারণে সেই আলোচনা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, এই সংঘাত এখন আর শুধু ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।