বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিধ্বস্ত, ইতিহাসে প্রথম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর আগুন ও ধোঁয়া দেখা যায়। ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি ওঠার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সংকেত বন্ধ হয়ে যায় এবং সে সময় এটি ৬২৫ ফুট উচ্চতায় ছিল। এরপর বিমানটি আহমেদাবাদের কাছে একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, উড়োজাহাজে থাকা সকল আরোহী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, একজন কানাডীয় এবং সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক ছিলেন। এছাড়াও পাইলট দুইজন ও কেবিন ক্রু দশজন ছিলেন।

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল ঘন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। দ্রুত জরুরি সেবা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে এবং ২০টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানায়, তারা দুর্ঘটনার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং নিহতদের পরিবার ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে। তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিহতদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও নিহতদের পরিবার ও দেশবাসীর প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি এক শোক বার্তায় উল্লেখ করেন, “আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই মর্মান্তিক ঘটনায় যারা তাদের প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। এই দুঃসময়ে আমাদের চিন্তা ও প্রার্থনা দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের এবং তাদের পরিবারদের সঙ্গে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ ভারতের জনগণ এবং সরকারের পাশে রয়েছে এবং প্রয়োজনে যে কোনো ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, বিমান বিধ্বস্ত হওয়া এলাকাটি একটি আবাসিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে। তাই দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন হোস্টেল শিক্ষার্থীও হতাহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার ও তৎপরতা এখনো চলছে।

বোয়িং কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ভারতের তদন্ত সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে এবং দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ে পূর্ণ সহযোগিতা করবে।

এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন সম্প্রদায়ের মধ্যে শোক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার এই দুর্ঘটনা বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের ইতিহাসে প্রথম বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটানো ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।