
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে ইরান শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েলের দিকে একযোগে শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, এই আক্রমণ প্রতিরোধে আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে এবং অনেক ড্রোনই ভূপাতিত করা হয়েছে।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানি হামলার প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে ড্রোনের বহর দেখা গেছে। একটি ভিডিওতে ইরাকের আকাশ দিয়ে একটি ড্রোন পশ্চিম দিকে ছুটে চলেছে বলে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ড্রোনটি ইসরায়েলের অধিকৃত কোনো এলাকায় গিয়ে আঘাত হেনেছে।
জানা গেছে, এই পাল্টা আক্রমণে ইরান তাদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘শাহেদ-১৩৬’ ড্রোনসহ বিভিন্ন ড্রোন ভেরিয়েন্ট ব্যবহার করেছে। এসব ড্রোন স্বল্প উচ্চতায় দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে সক্ষম এবং পূর্ব ইরাকের আকাশ হয়ে ইসরায়েলের দিকে এগিয়ে যায়।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ৩টার দিকে ইসরায়েল একটি ‘টার্গেটেড অ্যাসল্ট’-এর মাধ্যমে ইরানের সামরিক ও পরমাণু অবকাঠামোতে আঘাত হানে। ওই অভিযানে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল হোসেইন সালামি এবং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাগেরি নিহত হন।
এছাড়াও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের দুই গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু বিজ্ঞানী। তেহরানের তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মোহাম্মদ মেহেদি তেহরানচি এবং ফেরেদুন আব্বাসির মৃত্যু হয়েছে ওই হামলায়। এর ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ আরও বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি এখন পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং উভয়পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।