ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি মনিরুল মাওলা গ্রেপ্তার
সংগৃহীত ছবি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মাওলাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রোববার (২২ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

ডিবি দক্ষিণ বিভাগের যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম এবং উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানান, মনিরুল মাওলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একাধিক মামলা রয়েছে। সেই মামলাগুলোর ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি ডিবি হেফাজতে রয়েছেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

২০১৭ সালে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর থেকেই ব্যাংকটির ঋণ বিতরণে অস্বাভাবিক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ সামনে আসে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই গ্রুপের অনুকূলে নানা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে মনিরুল মাওলা ছিলেন ব্যাংকটির শীর্ষ নির্বাহী, যিনি এস আলম গ্রুপের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রথমে তাঁকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এডিএমডি), পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ইসলামী ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রামের তিনটি শাখা থেকে তিনটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ৩ হাজার ২৫৭ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছিল, যা নিয়মবহির্ভূত বলে জানা যায়।

এরপর দুদকে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। অনুসন্ধান শেষে দুদক সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে, যার অন্যতম আসামি মনিরুল মাওলা। পরে আরও একটি মামলায় ৫৪ জনকে আসামি করা হয়, যেখানে আবারও মনিরুল মাওলার নাম উঠে আসে। এসব মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে—১ হাজার ৯২ কোটি টাকা ও ৯৯৪ কোটি টাকা আত্মসাতের।

২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ইসলামী ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হলে এমডি মনিরুল মাওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এর আগে ডিসেম্বরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে তাঁকে অফিস ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।