দীর্ঘ বন্ধের পর খুলল ডিএসসিসির নগর ভবন, সীমিত পরিসরে সেবা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

দীর্ঘ ৪০ দিনের বন্ধের পর অবশেষে খুলেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবন। আজ রোববার সকালে ভবনের প্রধান ফটক খুলে দেওয়া হয় এবং সকাল ৯টার দিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধীরে ধীরে ভবনে প্রবেশ করতে শুরু করেন। যদিও পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও কিছু নাগরিক সেবা কার্যক্রম আংশিকভাবে শুরু হয়েছে।

গত ১৪ মে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মচারীর আন্দোলনের কারণে নগর ভবনে কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আন্দোলনকারীরা বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে অবস্থান নেন। অবশেষে আজ কিছুটা নমনীয়তা দেখা গেছে তাদের মধ্যে।

ডিএসসিসির দুজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগে কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে ফিরেছেন এবং কর্মঘণ্টা অনুযায়ী কাজ শুরু করেছেন। তবে এখনো অনেকেই অফিসে উপস্থিত হননি। জরুরি কিছু বিভাগ—যেমন জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিভাগ—আংশিকভাবে সেবা দিতে শুরু করেছে। সেবার জন্য আসা নাগরিকদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে, সব কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি, তবে আগের চেয়ে পরিবেশ ভালো।

নগর ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মী জানান, তারা সকালেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়েছেন ভবন খুলে দেওয়ার, সেই অনুযায়ী ফটক খোলা হয় এবং কর্মকর্তারা প্রবেশ করেন। তার ভাষায়, “অনেক দিন পর নগর ভবনে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।”

ডিএসসিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, “আন্দোলন পুরোপুরি শেষ না হলেও নাগরিক ভোগান্তি বিবেচনায় কিছুটা ছাড় দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। তাই সেবা পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তবে সব বিভাগ এখনো চালু হয়নি। প্রকৌশল বিভাগের বেশিরভাগ কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে, এমনকি প্রশাসকের কক্ষেও তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

এদিকে জানা গেছে, নগর ভবনের বাইরে অবস্থিত ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়েও আজ থেকে আংশিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে ওইসব জায়গাতেও প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা এখনো কাজে ফেরেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসসিসির একজন প্রকৌশলী বলেন, তিনি আজ সকালে সায়েদাবাদের অঞ্চল-৫ কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান করেন, কিন্তু ভেতরে ঢোকেননি। কারণ, আন্দোলনকারীরা প্রকৌশল বিভাগ চালু হবে কি না—তা স্পষ্টভাবে জানাননি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের জয় বাতিল করে দেন এবং বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময়ে, গত ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করলেও এখন পর্যন্ত ইশরাককে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়নি। এ কারণেই এই আন্দোলন শুরু হয়, যা প্রায় দেড় মাস নগর ভবন অচল করে রেখেছিল।