
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার চরম অব্যবস্থাপনার ঘটনায় দুই নারী বারান্দায় সন্তান প্রসব করেন, যেখানে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর গ্রামের সাহিন মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম (১৯) ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রামপাশা গ্রামের রতন চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুপ্রিতা রানী দাস (২৫) – এই দুই গর্ভবতী নারীকে ওসমানী হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। তবে শয্যা সংকটের কারণে তাদেরকে বারান্দায় অপেক্ষা করতে বলা হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রসব ব্যথা শুরু হলে বারবার নার্সদের জানানো হলেও তারা কোনো সাড়া দেননি বলে অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। একপর্যায়ে সুমি বেগম বারান্দাতেই সন্তান প্রসব করেন। মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে সুপ্রিতাও একইভাবে বারান্দায় সন্তান জন্ম দেন। এ সময় অন্য রোগীর স্বজনরা তাদের পরনের কাপড় দিয়ে ঘেরাও করে সাহায্য করেন। পরে এক নারী চিকিৎসক এসে তাদের ওয়ার্ডে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরেই সুমি বেগমের নবজাতকটি মারা যায়।
এ ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক হিলাল উদ্দিন শিপু ও নিজাম উদ্দিন টিপু। তারা জানান, তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হাসপাতালের নার্সদের অসৌজন্যমূলক আচরণের মুখে পড়েন তারা।
নিজাম উদ্দিন টিপু বলেন, “প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে বারবার চিকিৎসক ও নার্সদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দেননি। প্রথম একজন নারী এবং পরে আরেকজন একই জায়গায় সন্তান প্রসব করেন। আশপাশে থাকা এক নারী তার শাড়ি দিয়ে ঘেরাও করে সহযোগিতা করেন। পরে প্রায় ১৫ মিনিট পর তাদের ভেতরে নেওয়া হয়।”
সুমি বেগম অভিযোগ করেন, “হাসপাতালে আসার পর আমাকে দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়।” তার বাবা আজাদ মিয়া এ বিষয়ে ওসমানী হাসপাতাল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। যদিও পরে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, “অনেক সময় একসঙ্গে অনেক রোগী এলে পর্যায়ক্রমে নেওয়া হয়, এতে বিলম্ব হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”