আবু সাঈদ হত্যা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল
সংগৃহীত ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। সোমবার (৩০ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ অভিযোগ দাখিল করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় অভিযোগ আমলে নেওয়া নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর, ছাত্রলীগ নেতা এবং পুলিশের কর্মকর্তারা রয়েছেন। চারজন আসামি—এসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশ—এখন কারাগারে আছেন। তারা অন্য মামলায় আগে থেকেই গ্রেপ্তার।

প্রসিকিউশন জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই পুলিশ গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। সেদিন তার দুই হাত প্রসারিত করার পরপরই তাকে গুলি করা হয়। সেই মর্মান্তিক দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র-জনতার মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন রূপ নেয় দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়ে ১৯ জুলাই কারফিউ জারি করে সরকার। তবে গণআন্দোলনের তীব্রতায় ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা দেশত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমান।

সরকার পতনের এ আন্দোলনে সরকারি হিসাবে প্রাণ হারান প্রায় সাড়ে আটশ মানুষ। এরপরই এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচারের উদ্যোগ নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালটি মূলত ২০১০ সালে গঠিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমের জন্য।

এই মামলায় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ ও এস এম মঈনুল করিম। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন ও দেলোয়ার হোসেন সোহেল।

আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে তার পরিবার ১৩ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দেয়। তদন্ত সংস্থা ৩০ জনের সম্পৃক্ততার বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে।