
রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রণীত নকশায় তৈরি ব্যাটারিচালিত রিকশা বা ই-রিকশা চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রাথমিকভাবে পল্টন, ধানমন্ডি ও উত্তরা—এই তিন এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে চলবে এসব রিকশা। আগামী আগস্ট থেকেই রাস্তায় দেখা যাবে আধুনিক ডিজাইনের এই যানবাহন।
শনিবার (২৮ জুন) ডিএনসিসি নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে ‘তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি’র উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রাজধানীতে শৃঙ্খলাপূর্ণ গণপরিবহন নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “অনিয়ন্ত্রিতভাবে রিকশা চলাচলের অবস্থা এবার থাকবে না। প্রতিটি এলাকার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক রিকশা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। চালকেরা যেন কোনো চাঁদাবাজি বা হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা হবে।”
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, আগস্টের শুরু থেকে নতুন রিকশাগুলো রাস্তায় নামবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমানে চলমান রিকশাগুলোর সঙ্গে এই ই-রিকশাগুলো ধাপে ধাপে যুক্ত হবে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে পুরোনো রিকশাগুলো তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই উদ্যোগের আওতায় প্রথম পর্যায়ে এক লাখ রিকশাচালককে প্রশিক্ষণ দিয়ে লাইসেন্স দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের জন্য ৩০০ জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হচ্ছে—যাঁদের মধ্যে রয়েছেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যুব মহিলা ও পুরুষ প্রতিনিধিসহ ঢাকা মহানগর পুলিশ-এর সদস্যরাও।
ই-রিকশার জন্য নির্ধারিত চার্জিং স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। অনুমোদিত পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও চার্জ দেওয়া যাবে না।
এছাড়া সম্প্রতি “সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল প্রবিধান, ২০২৫” নামে একটি নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে উল্লেখ আছে—
-
ই-রিকশা শুধু সিটি কর্পোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশ নির্ধারিত সড়কে চলবে।
-
হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে, বাস সড়ক ও ফুটপাতে চলাচল নিষিদ্ধ।
-
চালকদের বাম লেনে চলাচল, মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ও নির্ধারিত যাত্রীসীমা বজায় রাখতে হবে।
-
৪০ ডেসিবেলের বেশি হর্ন বাজানো যাবে না।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, এ উদ্যোগ সফল হলে পর্যায়ক্রমে রাজধানীর অন্যান্য এলাকাতেও ই-রিকশা চালু করা হবে।