
‘বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি’ (বিজিপি) নামের একটি নতুন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করেছে। তবে দলটির যেটিকে দাপ্তরিক কার্যালয় হিসেবে দেখানো হয়েছে, সেটির অস্তিত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় ‘হক ভিলা’র পঞ্চম তলায় দলীয় কার্যালয় থাকার কথা বলা হলেও সরেজমিনে গিয়ে কোনো কার্যক্রম বা কার্যালয়ের উপস্থিতি মেলেনি।
মঙ্গলবার সকালবেলায় ওই ভবনের পঞ্চম তলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ইট ও নির্মাণসামগ্রী ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। দরজা-জানালাবিহীন দুটি কক্ষ, যেগুলোর মেঝেতেও ইট আর খোয়া স্তূপ করে রাখা—অপরিচ্ছন্ন ও ব্যবহারের অযোগ্য। না আছে কোনো ফার্নিচার, না আছে সাইনবোর্ড বা কোনো দলীয় পরিচিতি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেখানে কিংবা আশপাশে ‘বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি’র কোনো কার্যক্রম তাঁরা কখনো দেখেননি। অনেকেই এই দলের নাম আগে শোনেননি। হক ভিলার পাশের বাড়ির বাসিন্দা ও নবাবগঞ্জ কারিগরি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে এই এলাকায় এমন কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই।’
দলটির প্রধান নেতা হিসেবে আছেন রেজাউল হক, যিনি হক ভিলার মালিক এবং পেশায় একজন আইনজীবী। ভবনের তৃতীয় তলায় তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। স্থানীয় রাজমিস্ত্রি হাবিবুর রহমান জানান, গত ছয় মাসে ভবনের ওপরতলায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক সভা বা কর্মকাণ্ড দেখেননি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রেজাউল হক জানান, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ‘বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি’ নামে দলটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। দলটিতে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পার্বতীপুরের তালাশ মামুন।
দল গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা দুর্নীতিবিরোধী, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও নবীজি (সা.)-এর আদর্শে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছি।” দলটির একটি ১৩ দফার ইশতেহার রয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, নারীরা রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; একই ব্যক্তি দুইবারের বেশি এসব পদে থাকতে পারবেন না; এবং মসজিদের খতিব ও মুয়াজ্জিনদের বেতন রাষ্ট্র দেবে।
কার্যালয় প্রস্তুত না রাখার বিষয়ে রেজাউল হক বলেন, “নির্বাচন কমিশনে কাগজপত্র দেওয়ার সময় ভেবেছিলাম, নিবন্ধন হয়তো পাব না। তাই খরচ করে অফিস বানানো হয়নি।”