
করোনার চাইতেও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠছে বাংলাদেশের বিদ্রোহী বাতাস। ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ইতোমধ্যেই আক্রান্ত সিরিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও নেপাল। আর এবার সে সংক্রামক ব্যাধি আঘাত হেনেছে ইউরোপে। বর্তমানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। রাজধানী প্যারিস থেকে শুরু করে রেনেস, নান্টেস, মন্টপেলিয়ে এবং মার্সেইল, সর্বত্র চলছে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ আর অগ্নিকাণ্ড।
১০ সেপ্টেম্বর বুধবার ভোর থেকেই শুরু
হয় "ব্লোকঁ তু" অর্থাৎ সবকিছু বন্ধ করো আন্দোলন।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় ব্যারিকেড তোলে, সড়ক অবরোধ করে
এবং অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশের টিয়ারশেল
আর বিক্ষুব্ধ তরুণদের পাল্টা প্রতিরোধে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় প্যারিসের রাস্তাঘাট।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ এর বেশি বিক্ষোভকারীকে
গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এমন
উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিলেন ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়াঁ
লেকর্নু। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই তাকে পড়তে হলো
আন্দোলনের ঝড়ের মুখে। সরকার ইতোমধ্যেই ৮০ হাজার পুলিশ
ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে দেশজুড়ে।
প্রেসিডেন্ট
ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বাজেটে ব্যয় সংকোচন নীতি, সামাজিক সেবার বৈষম্য আর তরুণ সমাজের
হতাশাই মূলত এ বিক্ষোভের
পেছনে কাজ করছে। বিশ্লেষকরা
বলছেন, এ আন্দোলন ফ্রান্সের
তরুণদের দীর্ঘদিনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসন্তুষ্টির
বিস্ফোরণ।
এই বিক্ষোভ শুধু জনজীবন নয়,
থমকে দিয়েছে পরিবহন ব্যবস্থাও। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৈদ্যুতিক লাইনের ক্ষতির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে
ট্রেন চলাচল। এমনকি রেনে একটি বাসে
আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে।
পরিস্থিতি
আরও জটিল করে তুলেছে ধর্মীয়
উত্তেজনা। প্যারিসের কয়েকটি এলাকায় মসজিদের বাইরে প্রেসিডেন্টের নামে শূকরের মূর্তি
পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি তদন্তাধীন।
দেশজুড়ে
সতর্কতা জারি করেছে ফরাসি
সরকার। সাধারণ মানুষকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের না হতে
অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের বিপ্লবী বাতাস ছুঁয়ে গেছে ইউরোপকেও। ফ্রান্স এখন প্রশ্নের মুখে এই তরুণ-বিদ্রোহ কি আদৌ থামবে, নাকি ছড়িয়ে পড়বে আরও দূরে?