
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২১) ও তার মা তাহমিনা বেগমকে (৪৫) শ্বাসরোধে হত্যা করেছে কবিরাজ ও মাদ্রাসার খাদেম মোবারক হোসেন (২৯)। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লা শহরের কালিয়াজুরী এলাকার ভাড়া বাসা থেকে মা মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পুলিশ জানায়, নিহত সুমাইয়া কথিতভাবে ‘জ্বীনে ধরার’ সমস্যায় ভুগছিলেন। এজন্য তাহমিনা বেগম মেয়েকে নিয়ে স্থানীয় বাবুস সালাম জমিরিয়া মাদ্রাসায় ঝাড়ফুঁক করাতে যেতেন। সেখানে আসামি মোবারকের সঙ্গে পরিচয় হয় তাহমিনার। পরে তিনি মেয়েকে ঝাড়ফুঁক করানোর জন্য মোবারককে বাসায় আনতে শুরু করেন। গত এক মাস ধরে আসামি নিয়মিত ওই বাড়িতে যাতায়াত করছিলেন।
পুলিশের তথ্যমতে, ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোবারক একটি কমলা রঙের শপিং ব্যাগ ও একটি কালো ব্যাগ নিয়ে ওই বাসায় প্রবেশ করেন। সেদিনও তিনি সুমাইয়াকে ঝাড়ফুঁক করেন। এরপর সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে ১১টা ৩৪ মিনিটে আবার ফিরে আসেন। এ সময় তিনি সুমাইয়ার কক্ষে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান।
তাহমিনা বেগম ঘটনাটি দেখে ফেললে বাধা দেন। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তির মধ্যে মোবারক তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। পরে তিনি পুনরায় সুমাইয়ার কক্ষে প্রবেশ করে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সুমাইয়া প্রতিরোধ করেন। তখন তাকেও গলা টিপে হত্যা করা হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর আসামি বাসা থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। সোমবার রাতেই ঢাকা পালানোর পথে দেবিদ্বারের দুর্গাপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
তার বাসা থেকে নিহতদের চুরি হওয়া মোবাইল, ল্যাপটপ ও হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত কমলা রঙের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, “প্রেস ব্রিফিংয়ে যা জানানো হয়েছে তা ই সঠিক তথ্য। তদন্তের স্বার্থে এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না।”