
আইনপ্রণেতারা যখন নিজেদের জন্য বাড়তি সুবিধার খাতায় সই করছেন, তখন শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে জানাচ্ছে তীব্র প্রতিবাদ। এভাবেই শুরু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় চলমান অস্থিরতা। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ আর সিরিয়ার পর এবার ইন্দোনেশিয়ার রাস্তাও কাঁপছে ছাত্র আন্দোলনের স্লোগানে।
ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি ব্যয় নিয়ে জনঅসন্তুষ্টি থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন ক্রমেই রূপ নিচ্ছে সহিংস বিক্ষোভে। রাজধানী জাকার্তা থেকে ছড়িয়ে পড়া এই আন্দোলন মঙ্গলবার গিয়ে আঘাত হানে শিক্ষাঙ্গনে। বানদুংয়ের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব বানদুং, ইউএনআইএসবিএ এবং পাশের পাসুন্দান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, 'নিরাপত্তা বাহিনী ক্যাম্পাসে নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছে।'
পাসুন্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যোগা তাদিয়ালাগা রুচিয়াত ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, 'শিক্ষাঙ্গন হওয়ার কথা নিরাপদ আশ্রয়স্থল, অথচ সেটিই পরিণত হয়েছে সংঘর্ষের ময়দানে।'
এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল আইনপ্রণেতাদের বাড়তি আর্থিক সুবিধা ও সরকারি ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে। প্রথমে রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হলেও পুলিশ ভ্যানের চাপায় এক ট্যাক্সিচালকের মৃত্যুতে আন্দোলন ভয়াবহ রূপ নেয়। এরপর ছড়িয়ে পড়ে ভাঙচুর, লুটপাট আর সহিংসতা। ইতোমধ্যে অন্তত আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, আর্থিক ক্ষতিও দাঁড়িয়েছে কয়েক লাখ মার্কিন ডলারে।
স্থানীয় পুলিশের দাবি, 'ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা হয়নি, বরং আশ্রয় নেওয়া বহিরাগতদের সরানোই ছিল উদ্দেশ্য।' তবে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ বাড়ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, বিক্ষোভ দমন করতে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছে। জাতিসংঘও ঘটনাগুলো তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, 'প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর ক্ষমতার এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই এই আন্দোলন তাঁর নেতৃত্বের প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কি বিশ্ব আরোও একবার দেখতে চলেছে ছাত্র বিপ্লবের মহরা?