কুড়িগ্রামে শীতে কাবু শিশু-বয়স্করা, বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনজীবন। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে। এর প্রভাব পড়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে। প্রতিদিনই বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা, উপচে পড়ছে শিশু ওয়ার্ড।


কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের ভর্তি হতে দেখা গেছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, শীতের শুরু থেকেই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া ও ব্রঙ্কিওলাইটিসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে।


চরের বাসিন্দা ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে শীতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে শিশু ও বয়স্করা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে আসছে।


কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদেরপাড়ের চর যাত্রাপুর এলাকার কৃষক সিদ্দিক খন্দকার ও জোবেদ আলী বলেন, চর এলাকায় ঠান্ডার প্রকোপ বেশি থাকে। চারদিক ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে। তারা ঠিকমত কাজ করতে পারেন না।  আমাদের চরের বয়স্ক মানুষজন ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন। অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান তারা। 


কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গেল কয়েকদিন ধরে অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। সোমবার সকালে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে ঘন কুয়াশা থাকায় ঠান্ডার প্রকোপ বেশি অনুভূত হয়। রাতে ঠান্ডার প্রকোপ বেশি থাকছে। তবে ২৫ ডিসেম্বরের পর থেকে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।


কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা: স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, 'শীতকালে শিশুদের বুক ঢেকে রাখা, ভেজা কাপড় না পরানো, হালকা গরম পানি ব্যবহার এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শীতজনিত রোগ মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চলমান শৈত্যপ্রবাহ আরও দীর্ঘ হলে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছি। তাই সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসাই পারে এই শীতের দুর্ভোগ কমাতে পারে বলে জানান তিনি।'