ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের "যে ভারত খুনি পালে; সে ভারত ভেঙে দাও" সহ ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাসের প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা দ্রুত হাদীর খুনীদের বিচার ও ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এ সময় "নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর", "যে ভারত খুনি পালে সে ভারত ভেঙে দাও", " যে ভারত হাসিনা পালে সে ভারত ভেঙে দাও", "আমরা সবাই হাদী হব বুক চেতিয়ে লড়াই করব ", "বদরের পথ ধরো সেভেন সিস্টার স্বাধীন কর", "জামায়েত শিবির জনতা গড়ে তোল একথা", "দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা", "গোলামী না আজাদী, আজাদী-আজাদী", "গোলামী না শাহাদাত, শাহাদাত শাহাদাত ", "ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও-গুড়িয়ে দাও", "ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ", "শহীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না", "তুমি কে আমি কে, হাদী-হাদী", "হাদী ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিবো না", "লীগ পাবো যেখানে, ধোলাই হবে সেখানে", "একশন একশন, ডাইরেক্ট একশান", "আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম", ‘খুনীদের ফাঁসি চাই’, "খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনীদের রক্ষা নাই"সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের পরে আমাদের অসংখ্য জুলাই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ আমাদের বিপ্লবী হাদীকে হত্যা করা হয়েছে। হাদী আমাদের সবসময় আধিপত্যবাদ বিরোধিতা ও ইনসাফ শিখিয়ে গেছেন। তিনি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ভাঙতে কাজ করেছেন। এইসবের বিরুদ্ধে আমাদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে জেগে উঠতে হবে। হাদীকে আজ হত্যা করা হয়েছে। আমরা আজ শুধু হাদী হত্যার বিচারের জন্য আসিনি, আমরা বাংলাদেশ থেকে আধিপত্যবাদের কবর দিতে রাজপথে এসেছি। হাদীর খুনীদের অতিদ্রুত ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। পতিত আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে। যারা আওয়ামীলীগের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আপনারা সাবধান হয়ে যান। ইন্টেরিম সরকার হাদীকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আপনারা নিরাপত্তা দিতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। ভারত ও সন্ত্রাসীরা মিলে আমাদের বাঁচতে দিবে না। তাই আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরে বক্স কালভার্ট রোডে শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলিবিদ্ধ করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আজ মারা যান।

