বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস যুথি। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক লিখিত পদত্যাগপত্রের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানান তিনি।
পদত্যাগপত্রে জান্নাতুল ফেরদৌস যুথি উল্লেখ করেন, গত ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিবৃতির মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে তাকে যুগ্ম সদস্য সচিব পদে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এ বিষয়ে তার কোনো ধরনের সম্মতি বা মতামত নেওয়া হয়নি, যা তিনি অপমানজনক ও অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেন।
ওই পত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, 'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরাসরি যুক্ত থাকলেও তিনি কোনো রাজনৈতিক বা অর্ধ-রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী নন।'
তার দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বর্তমানে একটি অঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠনের রূপ নিয়েছে এবং তার কলেজ থেকেও এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পদত্যাগপত্রে অনুমতি ছাড়া তার নাম ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে তার আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।
পদত্যাগপত্রটি কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস যুথি বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নিজেদের অরাজনৈতিক দাবি করলেও বাস্তবে তারা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যেই কাজ করছে। এ বিষয়টি কারও অজানা নয়। আমি কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না এবং আপাতত রাজনীতিতে জড়ানোরও কোনো ইচ্ছা নেই। আমার পরিবার সম্পূর্ণভাবে অরাজনৈতিক আমরা কেউই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে চাই না। কলেজের প্রোটোকল ভঙ্গ করা কিংবা আমার পড়াশোনার ক্ষতি করা আমি চাই না। এসব কারণ বিবেচনায় নিয়ে আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
সদ্য ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সচিব খন্দকার আল ইমরান বলেন, 'প্রথমত তার (যুথি) সম্মতিতেই তাকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। কিন্তু একটি বাম রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় মূলত তারই প্ররোচনায় সে (যুথি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্পূর্ণ একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম, যুথির অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং মনগড়া বলেও দাবি করেন এই নেতা।
এর আগে গত ১৬ ই ডিসেম্বর মুখ্য সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম, সভাপতি রিফাত রশিদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিবৃতির মাধ্যমে ৬ মাসের জন্য কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে লোকমান হোসেন লিমনকে আহ্বায়ক, খন্দকার আল ইমরানকে সদস্য সচিব এবং সাকিব মিয়াকে মুখ্য সংগঠক করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

