হাদীর উপর হামলার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।


শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ও  হাদীর সুস্থতায় দোয়া-মোনাজাত করেন তারা। 


বিক্ষোভ মিছিলে "হাদী ভাই, আহত কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই," "ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ," "গুলিবিদ্ধ হাদী ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই," "আমার সোনার বাংলায়, সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই," "জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার," "দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা," "দল শিবির জনতা, গড়ে তোল একতা," "জামাত-বিএনপি জনতা," "গড়ে তোল একতা," "ওসমান হাদীর কারণে, ভয় করি না মরনে,"  "লীগ ধর জেলে ভর," "সন্ত্রাসীরা দেখে যা, রাজপথে তোর বাপেরা," "হাদী ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না," সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।


এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আহ্বায়ক এস এম সুইট, শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী, শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আইইউসানসের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল্লাহ শেখ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাতসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।   


বিক্ষোভ মিছিল শেষ সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, আজ জুলাই যোদ্ধা হাদির ওপর হামলা হয়েছে। এটা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র। দেশ ও জাতির সংস্কার চাওয়াতে এই হামলা। এই ষড়যন্ত্র মানুষ মেনে নিবে না। জুলাই বাঞ্চাল করার যাবে না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং অতি দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা। 


আইইউসানসের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই হামলার হুমকি অনেকদিন দিচ্ছিলো। কিন্তু আজ সরকারের ব্যর্থতায় হামলা হয়েছে। এই হাদীর রক্ত বারুদ হয়ে গোটা বাংলায় ছড়িয়ে যাবে। দেশে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গোটা দেশের ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। আওয়ামী-লীগ চায় না নির্বাচন হোক। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র ন্যাসাৎ করে ছাড়বো। 


ইবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, এই হামলা শুধু এক ব্যক্তির ওপর হামলা নয়। এটা সমগ্র জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা। সন্ত্রাসী হামলা করে আন্দোলন নিস্তব্ধ করা যায় না। ওসমান হাদী শুধু একজন ব্যক্তি নয়। তিনি সমাজের ন্যায়, অধিকার ও স্বাধীনতার কথা বলে। একটি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে। 


ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, একটি গ্রুপ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে জুলাই নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। একদল সুশীল জুলাই ও একাত্তরকে মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে। আজ জুলাইয়ের জনগণের জেগে উঠেছে। আমরা আর কোনো ছাড় দিতে রাজি নই। যেখানে জুলাইয়ের ওপর হামলা সেখানেই আমরা প্রতিবাদ করবো। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু লোক ষড়যন্ত্র করছে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করা হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাইয়ে সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবো। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আজ ইবিতে আরেকটি জুলাই নেমে এসেছে।সকল দল-মত জুলাইয়ের স্প্রীটকে ধরে রেখে নেমে এসেছে। হাদীর ওপর হামলা বিচ্ছিন্নভাবে নিলে আমরা ভুল করবো। এই হামলা ইন্টেরিম দায়িত্ব নেওয়ার পরেই শুরু হয়েছে। গতকাল চট্রগ্রামে এক জুলাই যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে৷ ব্যারিস্টার ফুয়াদের ওপর হামলা হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। আপনারা আর কোনো ষড়যন্ত্রের সাহস দেখাবেন না। ছাত্র-জনতা রুখে দিবে। আজ হাদীকে হত্যার জন্য হামলা করা হয়েছে। এক হাদী মারা গেলে লক্ষ হাদী জন্ম নিবে।