
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ।
তিনি বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কালো টাকার প্রভাব, মনোনয়ন বাণিজ্য কমে যাবে এবং জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। জামায়াত এক শতাংশ ভোটের ভিত্তিতে আসন বণ্টনের প্রস্তাব করেছে। তিনি আরও জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় এবং বাংলাদেশেও এমন নির্বাচন হলে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।
ড. আযাদ বলেন, আমরা চাই জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্দলীয় বা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক। কারণ দলীয় সরকারের অধীনে ভোট হলে ক্ষমতাসীন দল তার প্রার্থীকে জয়ী করে নেয়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তবেই তা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে।
বৈঠকে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বানও জানানো হয়। জামায়াতের মতে, প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ প্রবাসী রয়েছেন, যাঁরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাও সময়ের দাবি।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন পর জামায়াতের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন ন্যায্যতা ফিরিয়ে দিয়েছে। অতীতে তাদের দলীয় প্রতীক ও নিবন্ধন বেআইনিভাবে বাতিল করা হয়েছিল, যা চরম অন্যায় ছিল।
বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন, কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখছে এবং ইসি যেন কেবল কাগজে নয়, বাস্তবেও সংস্কারের প্রতিফলন ঘটায়—সে প্রত্যাশাও রয়েছে। ভবিষ্যতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।