আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লেক চাদের অস্থিতিশীল এলাকায় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জিহাদি গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা, মিলিশিয়া ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এতে অন্তত ২০০ জন নিহত হয়েছেন। এই তথ্য ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি সোমবার প্রকাশ করেছে।
সংঘর্ষটি রোববার লেক চাদের কাছের ডোগন চিকু এলাকায় ঘটে। স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা (আইএসডব্লিউএপি) সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মতাদর্শগত বিভেদের কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই দুই গোষ্ঠী এলাকায় আধিপত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে আসছে।
নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীকে সহায়তা করা একটি মিলিশিয়া সদস্য বাবাকুরা কোলা এএফপিকে জানান, প্রায় ২০০ জন বোকো হারাম জঙ্গি এই সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে বোকো হারামের সাবেক সদস্য, যিনি এখন সহিংসতা ত্যাগ করেছেন এবং ওই অঞ্চলের জিহাদি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন, দাবি করেছেন, সংঘর্ষে প্রায় ২০০ জন আইএসডব্লিউএপি যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এই লড়াইয়ে বোকো হারাম তাদের চার সদস্যকে হারিয়েছে বলে জানান সাবেক ওই যোদ্ধা, যিনি নিজেকে ‘সাদিকু’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
সাদিকু জানিয়েছেন, বর্নো রাজ্য জিহাদি সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু, বিশেষ করে রাজধানী মাইদুগুরি। তিনি বলেন, “দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ হতে যাচ্ছে, কারণ তারা একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই শুরু করেছে।”
নাইজেরিয়ার গোয়েন্দা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা সংঘর্ষ পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ধারণা করা হচ্ছে, ১৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, “২০১৬ সালে মতাদর্শগত বিভেদের পর থেকে আইএসডব্লিউএপি ও বোকো হারাম প্রাণঘাতী লড়াইয়ে লিপ্ত, যার অধিকাংশই লেক চাদ অঞ্চলে ঘটছে।”
এছাড়া, সংঘর্ষের ফলে দুই পক্ষের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্র এবং বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরণের সংঘাত অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।

