পরমাণু ইস্যুতে নমনীয় ইঙ্গিত, আংশিক ছাড়ে প্রস্তুত তেহরান
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ইসরায়েলের নেতৃত্বকে ইরানের ওপর হামলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন, তাহলে ইরানের সঙ্গে পুনরায় কূটনৈতিক সংলাপ শুরু হওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তা মাজিদ ফারাহানি। গত শুক্রবার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘ইরান সবসময় সংলাপকে গুরুত্ব দেয়—তা সরাসরি হোক বা মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে। আমাদের কাছে মূল বিষয় হলো আলোচনা শুরু হওয়া।’

ফারাহানি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইলে মাত্র একটি ফোনকলেই যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন এবং ইসরায়েলের আক্রমণ থামাতে পারেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, ইসরায়েল যদি বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখে, তাহলে কোনো ধরনের আলোচনা সম্ভব নয়।

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, ইরান সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার চিন্তা করছে না, কারণ এটি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে—এমনটাই তেহরানের দাবি। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, ইরান হয়তো কিছু ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখাতে পারে।

‘সম্ভবত আমরা সমৃদ্ধকরণের মাত্রা কিছুটা কমাব, তবে একেবারে বন্ধ করব না,’ বলেন ফারাহানি।

এদিকে ইউরোপের প্রধান শক্তিগুলোও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সুরে সুর মিলিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফ লেমোয়িন জানান, ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’ নীতির পক্ষে তাদের অবস্থান স্পষ্ট।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানে সরাসরি হামলার আগে অন্তত দুই সপ্তাহ আলোচনার সময় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত এখনও ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যেও একটি ক্ষীণ শান্তির আশা জিইয়ে রাখছে।

গত শুক্রবার জেনেভায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় যেখানে ইরান, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি–প্রধান অংশ নেন। চলমান উত্তেজনার মধ্যে এটি ছিল প্রথম উচ্চপর্যায়ের আলোচনা।

এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরেই ইরানকে লক্ষ্য করে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না—তা নিয়ে দ্বিধা ও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

ফারাহানি শেষ পর্যন্ত বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তবে ইরানের সামনে বহু পথ খোলা রয়েছে, তবে সবকিছু নির্ভর করছে আলোচনার সম্ভাবনার ওপর।