ট্রাম্পের ‘দুই সপ্তাহ’ নাটক, ইরান নিয়ে ধোঁয়াশা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। পাল্টা জবাবে ইরান ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। শনিবার (২১ জুন) ভোরে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা হয়েছে এবং সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এ অবস্থায় ইরানের খাতাম আল-আনবিয়া হেডকোয়ার্টারের মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে এমন সব ‘চমক’ রয়েছে যা দখলদার ইসরায়েলকে পৃথিবীর সামনে নত করতে বাধ্য করবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকেও সতর্ক করে বলেন, হস্তক্ষেপ করলে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলো হুমকির মুখে পড়বে।

ইসরায়েলের লাগাতার হামলার মুখে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্বে একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাঁচ দিন ধরে জনসমক্ষে অনুপস্থিত খামেনি যুদ্ধকালীন নেতৃত্ব ইরানের বিপ্লবী গার্ড কাউন্সিলের হাতে তুলে দিয়েছেন। বিশ্লেষকরা একে জরুরি পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরনো কৌশলেই ফিরেছেন—‘দুই সপ্তাহ’। যুদ্ধ হোক বা শান্তি, শুল্ক হোক বা স্বাস্থ্যনীতি—সবই তার ভাষায় “দুই সপ্তাহের মধ্যে” ঠিক হয়ে যাবে। ইরান ইস্যুতেও তিনি জানালেন, “দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব হামলা করব কি না।” অথচ এই দুই সপ্তাহ যে কখন শেষ হয়, তা আজও কেউ জানে না। বিশ্লেষকরা মজা করে বলছেন, ট্রাম্পের হাতে যেন একটি ‘দুই সপ্তাহ’ ঘড়ি আছে—যেটা শুধু সময় কাটানোর জন্যই চলে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ উত্তেজনা এমন আগুন ছড়াতে পারে, যা কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।

সামরিক শক্তি, রাজনৈতিক নাটক আর আন্তর্জাতিক দোদুল্যমানতার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য আবারও দাঁড়িয়ে আছে অনিশ্চয়তার মুখে।