ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা উপেক্ষিত, গাজায় ফের মারাত্মক সংঘাত
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি আহ্বান উপেক্ষা করে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল হামলা চালাচ্ছে। গতকাল শনিবার (৪ অক্টোবর) বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চিকিৎসাকর্মীরা।


ট্রাম্পের পরিকল্পিত ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব আংশিকভাবে গ্রহণে রাজি হওয়া ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলকে হামলা বন্ধের আহ্বান জানান। তবে সেই আহ্বান উপেক্ষা করেই ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে।


গতকাল শনিবার গাজা সিটির দুর্ভিক্ষকবলিত তুফফাহ এলাকায় এক আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাতটি শিশু রয়েছে, বয়স দুই মাস থেকে আট বছর। হামলায় আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবনও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি বাস্তুচ্যুত শিবিরেও হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে দুই শিশু নিহত ও অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। আল-মাওয়াসি ইসরায়েলের ঘোষণা করা নিরাপদ এলাকা হলেও সেখানে বারবার হামলা চালানো হয়েছে।


আল–জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং হাসপাতালগুলো ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা দিতে পারছে না। তিনি বলেন, “মাঠে যা ঘটছে, তাতে কোনো যুদ্ধবিরতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।” কিছু হাসপাতাল জ্বালানিসংকটের মধ্যেও সচল রয়েছে।


ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামাজিক মাধ্যম পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি দেরি মেনে নেবেন না এবং যুদ্ধ দ্রুত সমাধান করতে চান। তিনি লিখেছেন, ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে এবং হামাস নিশ্চিত করলে যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, জিম্মি ও বন্দি বিনিময়ও শীঘ্রই কার্যকর হবে।


হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ মেনে নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং বন্দি বিনিময়। তবে হামাস অস্ত্র সমর্পণে রাজি কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার মিসরে পাঠানো হবে, যেখানে জিম্মি মুক্তি ও স্থায়ী শান্তিচুক্তির কারিগরি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে।


মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিদল মিসরে বসবে এবং বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে। ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রথম ধাপে হামাসের কাছে থাকা সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাবে এবং বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবেন।


বিশেষজ্ঞদের মতে, হামলা ও সংঘাতের কারণে ফিলিস্তিনি জনগণের মানবিক সংকট তীব্র হচ্ছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি তৈরি হচ্ছে।