৩০ বছর পর হাসি ফিরল খুরশিদ মাঝির মুখে
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
৩০ বছর ধইরা নৌকা বাই৷ অভাবের যন্ত্রণা আমার মুখের হাসি কাইরা লইয়া গেছিলোগা৷ এহন আমি নতুন দোহান পাইছি সরকার থাইক্যা৷ এইডা দেইখ্যা, ৩০ বছর পরে মনডার মধ্যে আনন্দে ভইরা গেছেগা৷ এই দোহান দিয়া কয়ডা পয়সা পাইলে আমার কষ্ট কিছুডা কমবো।' হাসতে হাসতে কথাগুলো বলছিলেন প্রতিবন্ধী খুরশিদ মাঝি (৬৬)। 


অদম্য এই মানুষটি আজ আশার আলো দেখছেন নতুন দোকানের মালিক হয়ে। স্বচ্ছলতার নতুন গল্প শুরু হয়েছে তাঁর জীবনে।


আজ সকালে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চরপুক্ষিয়া মৃধাবাড়ি খেয়াঘাটে এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে খুরশিদ মাঝির হাতে তুলে দেন নতুন দোকান ও ব্যবসায়িক মালামাল।


স্থানীয়রা জানান, খুরশিদ মাঝি তাদের জন্য এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা। জীবনের কঠিন সময়েও তিনি হাল ছাড়েননি। প্রতিবন্ধকতা ও অভাব সত্ত্বেও ভিক্ষার পথে না গিয়ে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। নিজের পরিশ্রমে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার এই মানসিকতা এক অনন্য দৃষ্টান্ত।


সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর ঘাটে মাঝির নতুন দোকান ঘিরে স্থানীয়দের ভিড়। নতুন দোকানের সাজানো মালামাল, পাশে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে মাঝি ও তাঁর স্ত্রী। তাঁরা জানান, এখন থেকে নৌকা চালানোর পাশাপাশি দোকান পরিচালনা করবেন দু’জনে মিলে। সংসারে গতি আসবে, কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে—এই আশা তাঁদের চোখেমুখে স্পষ্ট।


কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে আমরা প্রায়ই সহায়তা দিই, কিন্তু আজকের সহায়তাটা সত্যিই আলাদা। মাঝির মুখে হাসি দেখে আমাদেরও আনন্দ হচ্ছে। এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে এই উদ্যোগ আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে। মানবিক সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”


স্থানীয়রা বলেন, খুরশিদ মাঝি শুধুই একজন মাঝি নন—তিনি সংগ্রামী জীবনের প্রতীক। তাঁর এই নতুন শুরু অনেকের মনে জাগাবে সাহস ও আত্মবিশ্বাস।