
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা–২০২৫ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। সভায় জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিধি, বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের কমিটির সদস্য, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাঙালির মিলনমেলা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে এই উৎসব উদযাপনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা, জরুরি বহির্গমন পথ খোলা রাখা এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভায় আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।
পূজার দিনগুলোতে যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। বিশেষ করে প্রতিমা বিসর্জনের সময় সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হবে।
সিভিল সার্জনের অফিস থেকে পূজামণ্ডপগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি মণ্ডপের আশপাশের এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে পৌরসভা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জন সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসর্জন স্থানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা এবং নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
পূজার সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যা ও রাতে যাতে লোডশেডিং না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে।
সভায় অংশগ্রহণকারী পূজা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ প্রশাসনের সহযোগিতায় গত বছর শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং এবারের জন্যও একই রকম সহযোগিতা কামনা করেন।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সক্রিয় সহযোগিতা থাকলে এবারের দুর্গাপূজা চুয়াডাঙ্গায় এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, বরং আমাদের সম্প্রীতি ও সংস্কৃতির প্রতিফলন হবে।