নাকসুতে শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলন তীব্র
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে প্রকাশিত খসড়া গঠনতন্ত্র সংশোধনের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের বরাবর এই স্মারকলিপি পেশ করা হয়।



গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ “নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ” বা সংক্ষেপে “নাকসু” নামে পরিচিত হবে। প্রস্তাবিত কাঠামোতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ হিসেবে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ। বাকি ২১টি পদে দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরা। একইভাবে হল সংসদে সভাপতি থাকবেন হল প্রভোস্ট এবং কোষাধ্যক্ষ থাকবেন প্রভোস্ট কর্তৃক মনোনীত একজন আবাসিক শিক্ষক। বাকি ১৫টি পদে দায়িত্ব পালন করবেন শিক্ষার্থীরা।



খসড়া প্রকাশের পরপরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, গঠনতন্ত্রে সভাপতির পদে উপাচার্যের অবস্থান শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকে কার্যত প্রশাসনের অধীন করে দিচ্ছে। এছাড়া একাডেমিক কাউন্সিল বা সিন্ডিকেটে নাকসুর কোনো প্রতিনিধি না থাকায় প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।



শিক্ষার্থীরা জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী দাবি করেন। এর মধ্যে রয়েছে— ভিপি ও জিএসকে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য করা; অন্যান্য পদধারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা; নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কমিটি গঠন করা; এবং ভোটার তালিকা ও প্রার্থীতার বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া।



ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, “ছাত্র সংসদের সভাপতির ক্ষমতা হ্রাস করা এবং সিন্ডিকেটে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার দাবিটা আমরা প্রথম দিন থেকেই জানাচ্ছি। অথচ গঠনতন্ত্র উন্মুক্ত না রেখেই হঠাৎ করে প্রকাশ করা হয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন হলে নাকসু প্রশাসনের লেজুড়বৃত্তিক সংগঠনে পরিণত হবে।”



আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জেনাস ভৌমিক বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিপি-জিএস সিন্ডিকেট সদস্য হতে পারে, প্রশ্ন তুলতে পারে, এমনকি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আলাদা বরাদ্দও দেওয়া হয়। অথচ এখানে কোষাধ্যক্ষ চাইলে ভিপি-জিএস ছাড়াই অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন উপাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে। এমনকি এমফিল শিক্ষার্থীদেরও ভোটাধিকার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে গঠনতন্ত্রটি সর্ব দিক থেকেই শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করতে অক্ষম।”