দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানিঃ দেশের প্রাচীনতম চিনিকল ও শিল্প কমপ্লেক্স
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
বাংলাদেশের শিল্প ইতিহাসে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির নাম এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান শুধু চিনি ও ডিস্টিলারি পণ্যের জন্যই নয়, বরং বহুমুখী উৎপাদন ব্যবস্থার কারণে এখন দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্প কমপ্লেক্সে পরিণত হয়েছে।

ব্রিটিশ নাগরিক রবার্ট রাসেল কেরু দর্শনায় কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল দৈনিক এক হাজার টন আখ মাড়াই এবং ১৮ হাজার প্রুফ লিটার স্পিরিট উৎপাদন। শুরু থেকেই এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

কারখানাটি প্রথমে তৎকালীন নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল, তবে বর্তমানে এটি চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলায় অবস্থিত। স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের অধীনে আসে।

১৯৭৮ সালে যন্ত্রপাতি পুরনো হয়ে গেলে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সুগার ইন্ডাস্ট্রি প্রজেক্টের আওতায় প্রায় ৩১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এর আধুনিকীকরণ করা হয়। এর ফলে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে দৈনিক ১১৫০ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়।

বর্তমানে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি শুধু চিনিকল নয়; এখানে ডিস্টিলারি, ঔষধ কারখানা এবং ৩৩৪৬ একর বিস্তৃত কৃষি খামারও রয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জৈব সার উৎপাদন করছে, যা দেশের বাজারে ইতিমধ্যেই গুরুত্ব পেয়েছে।

দেশের অন্যতম প্রাচীন শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি এখনো অর্থনীতি ও শিল্প খাতকে সমৃদ্ধ করছে। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শিল্প খাতের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।