ঈদুল আজহা ২০২৫: সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্র
ছবিঃ সংগৃহীত

ঈদুল আজহা মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এ উপলক্ষে প্রতি বছর দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ রাজধানীসহ প্রধান শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যান। তবে এই ঈদযাত্রা ও ফিরতি পথের সময় নানা অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারণে বাড়ে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। ২০২৫ সালের ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশের সড়ক, রেল ও নৌপথে সংঘটিত দুর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্র

*সর্বমোট দুর্ঘটনার চিত্র (৩১ মে – ১৪ জুন, ১৫ দিন)*


পথের ধরন       ||          দুর্ঘটনা            ||        নিহত         ||          আহত

সড়ক পথ                     ৩৭৯টি                    ৩৯০ জন              ১১৮২ জন

রেল পথ                       ২৫টি                      ২৫ জন                 ১২ জন

নৌ পথ                       ১১টি                        ১২ জন                 ০৬ জন (নিখোঁজ ৬ জন)


*মোট*                        *৪১৫টি*                  *৪২৭ জন*            *১১৯৪ জন*

 

মোটরসাইকেল ছিল সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাহন।

* মোট দুর্ঘটনা: ১৩৪টি

* নিহত: ১৪৭ জন

* আহত: ১৪৮ জন

* মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫.৩৫% মোটরসাইকেল-সম্পর্কিত

দুর্ঘটনার ধরণ ও কারণ

1. পথচারীকে চাপা দেওয়া: ৪০.৬৩%

2. মুখোমুখি সংঘর্ষ: ২৮.২৩%

3. যান খাদে পড়ে যাওয়া: ২০.০৫%

4. অন্যান্য অনির্ধারিত দুর্ঘটনা: ১০.২৯%

5. ট্রেন–বাহন সংঘর্ষ: ০.৭৯%

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতে, এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ:

* দ্রুতগামী ও অদক্ষ চালক

* ফিটনেসবিহীন যানবাহন

* অতিরিক্ত যাত্রী ও বোঝা

* আইন না মানা, বিশেষত মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট না পরা

* সড়কে পুলিশের অদক্ষ তদারকি ও দুর্বল নজরদারি

প্রস্তাবনা ও সুপারিশ

1. ঈদের আগে কমপক্ষে ৪ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা*

2. মহাসড়কে হালকা যান ও মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণ*

3. সকল যানবাহনের ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা*

4. ডিজিটাল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো*

5. সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালু করা (স্কুল–কলেজ, গণমাধ্যম)*

ঈদ যাত্রা আনন্দের হলেও আমাদের জন্য অশ্রুভেজা এক বেদনার উৎস হয়ে উঠেছে। ২০২৫ সালের ঈদুল আজহার দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান আমাদের অবকাঠামো, সচেতনতা ও আইন প্রয়োগের দুর্বলতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। সময় এসেছে এগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে জাতীয়ভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের।