
আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক আবেগপ্রবণ হয়ে অঝোরে কেঁদে ফেলেন।
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের পাহারায় যখন তাঁকে বের করে আনা হচ্ছিল, তখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘পলক ভাই, আজ আপনি কাঁদলেন কেন?’—এই প্রশ্নে পলক কোনো উত্তর দেননি। তিনি সাংবাদিকদের অন্য প্রশ্নেরও কোনো জবাব দেননি। আজ যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একই ভবনে রয়েছেন শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের পর, ১৩ আগস্ট রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে এই দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাঁদের আইনজীবীদের তথ্যমতে, তাঁরা বর্তমানে কেরানীগঞ্জের চম্পাকলি ভবনে কারাবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। যদিও তাঁদের কক্ষ আলাদা, তবে একই ভবনে অবস্থানের কারণে তাঁদের মধ্যে প্রতিদিন দেখা হচ্ছে। আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে তাঁরা একই প্রিজনভ্যানে করে যাতায়াত করেন।
চম্পাকলি ভবনে তাঁদের সঙ্গে একই ভবনে আরও কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আছেন—যাদের মধ্যে রয়েছেন আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, এবং সাবেক সচিব জাহাঙ্গীর আলম, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, মহিবুল হক ও নজিবুর রহমান।
আনিসুল হকের আইনজীবী আসিফুর রহমান জানিয়েছেন, তাঁর কোনো নিকটাত্মীয় দেশে না থাকায় তিনি প্রতি ১৫ দিন পরপর কারাগারে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন। সময় কাটাতে আনিসুল হক ধর্মীয় গ্রন্থ, পত্রিকা ও আইনের বই পড়েন।
সালমান এফ রহমানের ক্ষেত্রেও একই তথ্য জানান তাঁর আইনজীবী। তিনিও পরিবারহীন অবস্থায় কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর সময় কাটে পত্রিকা ও ধর্মগ্রন্থ পাঠে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার জানিয়েছেন, সালমান-আনিসুলসহ মোট ৬০ জন প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী এই ভবনে রয়েছেন। তাঁদের অন্য বন্দীদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া হয় না, তবে একে অপরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ থাকে। প্রথম শ্রেণির বন্দীরা পনেরো দিন পরপর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন, যাঁদের তালিকায় থাকেন মা-বাবা, স্ত্রী ও সন্তানরা।
তিনি আরও জানান, কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির বন্দীদের জন্য উন্নতমানের খাবার—যেমন মাছ, মাংস বরাদ্দ থাকে। গত পয়লা বৈশাখে তাঁদের পান্তা-ইলিশ পরিবেশন করা হয় এবং ঈদের সময় মাংস সরবরাহ করা হয়েছিল।
আজ আদালতে হাজির করে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককেও যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।