বিচার নিয়ে খালি প্রচার? অগ্রগতির প্রমাণ মেলেনি এখনো
ছবিঃ সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘদিন থেমে ছিল। সাবেক শেখ হাসিনার সরকারের আমলে এ মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসে মামলাটি আবারও সচল করলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ত্বকীর বাবা, রফিউর রাব্বি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তনের সামনে ত্বকী হত্যার ১৪৮ মাস পূর্তিতে আয়োজিত মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। কর্মসূচির আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট, যারা প্রতি মাসের ৮ তারিখে নিয়মিতভাবে এই কর্মসূচি পালন করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম (কাজল) এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা (জুয়েল)। এতে আরও বক্তব্য দেন শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সিপিবি শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজয় রায় চৌধুরী, বাসদ জেলা সদস্য প্রদীপ সরকার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন এবং সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

রফিউর রাব্বি তাঁর বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, ত্বকীসহ বহু হত্যাকাণ্ডে জড়িত শামীম ওসমান ও তাঁর পরিবার একসময় পালিয়ে থাকলেও এখন তাঁরা বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত। তিনি আরও বলেন, দেশে নতুন করে দুর্বৃত্ত, মাফিয়া ও গডফাদার গড়ে উঠছে, যারা হাটবাজার, ঘাট, পরিবহনসহ প্রতিটি খাত দখলে নিচ্ছে। অভ্যুত্থানের পরেও জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী পরিবর্তন আসেনি, বরং সরকার অপরাধী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে।

তিনি আরও দাবি করেন, যাঁরা ত্বকীকে হত্যা করেছেন—তাঁদের মধ্যে আছেন শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান এবং সন্ত্রাসী শাহ নিজাম। এই চক্রই জুলাই মাসে ছাত্র ও শিশুদের ওপর গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সমাবেশে বক্তারা ত্বকী হত্যার মূল হোতা শামীম ওসমানসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে অভিযোপত্র দাখিলের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখযোগ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন ত্বকী। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে জানান, আজমেরীর নেতৃত্বেই ত্বকীকে অপহরণ ও পরে হত্যা করা হয়।