ভাইভা বিতর্কে উত্তপ্ত শাহবাগ, মহাসমাবেশে শিক্ষার্থীদের ঢল
ছবিঃ সংগৃহীত

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ভাইভা (মৌখিক পরীক্ষা) নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছেন বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, এই ভাইভা ছিল পক্ষপাতদুষ্ট, অনিয়মপূর্ণ এবং স্বচ্ছতার ঘাটতিতে ভরা। অনেককে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফেল করানো হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। এসব অভিযোগ সামনে এনে পরীক্ষার্থীরা আজ সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগে মহাসমাবেশ করেছেন।

সকাল থেকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পরীক্ষার্থীদের জমায়েতে মুখর হয়ে ওঠে শাহবাগ। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুরসহ নানা জেলা থেকে আসা পরীক্ষার্থীদের হাতে ছিল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার—যেখানে লেখা ছিল: “ভাইভায় প্রহসন মানি না”, “একই নম্বরে দুই রায়, মানিনা মানবো না”, “সবার জন্য সনদ চাই, দিতে হবে দিতে হবে।”

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এনটিআরসিএর ভাইভা প্রক্রিয়ায় একেক বোর্ডে ভিন্ন ভিন্ন মানদণ্ড প্রয়োগ করে পাশ-ফেল নির্ধারণ করা হয়েছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তারা বলেন, “এই ভাইভা একটি প্রহসন, এতে স্বচ্ছতার কোনো স্থান নেই। ভাইভা বাতিল করে পূনর্মূল্যায়ন করতে হবে।” দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে তারা ঘোষণা দেন।

ভাইভায় উত্তীর্ণ ও অনুত্তীর্ণের অনিয়মিত চিত্র তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা বলেন, কোথাও ৩০ জনের মধ্যে ২৯ জন ফেল করেছেন, আবার অন্য কোনো বোর্ডে দেখা গেছে ২৬ জন একসঙ্গে পাশ করেছেন। এত বড় বৈষম্যই বলে দেয় ভাইভা কতটা বিতর্কিত।

তাদের আরেকটি অভিযোগ, ফলাফল ঘোষণার ১৯ দিন পর ‘কারিগরি ত্রুটি’র কথা বলে ১১৩ জন অতিরিক্ত উত্তীর্ণ প্রার্থীর নতুন তালিকা প্রকাশ করে এনটিআরসিএ পরিস্থিতিকে আরও বিতর্কিত করে তোলে।

আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, যারা ভাইভায় উপস্থিত ছিলেন এবং যাদের কাগজপত্র সঠিক রয়েছে, তাদের সবাইকে সনদ দিতে হবে। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করে তাদের ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।

উল্লেখ্য, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের জন্য প্রায় ১৯ লাখ আবেদন জমা পড়ে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন, যাদের মধ্যে ৮১ হাজার ২০৯ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬০ হাজার ৬৩৪ জন। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। যাচাই শেষে যোগ্যদের নিয়োগ সুপারিশ দেওয়া হবে।