৫ দিন পরও বিএসএফের গুলিতে নিহত শহিদুলের লাশ ফেরত দেয়নি ভারত, অপেক্ষায় স্বজনেরা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

জীবননগর উপজেলার মাধবখালী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে নিহত শহিদুল ইসলামের লাশ এখনও দেশে ফিরতে পারেনি। মৃত্যুর পাঁচ দিন পার হলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দেহ হস্তান্তরের কোন নিশ্চয়তা দেয়নি।


পরিবারের স্বজনরা শোকে মুহ্যমান, চোখে ঘুম নেই, মুখে খাবার নেই। শহিদুলের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, “স্বামীকে শেষবার দেখতে চাইছিলাম, কিন্তু লাশটাও এখনো পাইনি।”


গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মাধবখালী সীমান্তের ৭০ নম্বর মেইন পিলার অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে গুলিতে নিহত হন শহিদুল ইসলাম (৩৭)। তিনি জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার নস্কর আলীর ছেলে ও দুই সন্তানের জনক।


পরিবারের দাবি,সেদিন শহিদুল গরুর জন্য ঘাস কাটতে দোয়ালের মাঠে গেলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে ধরে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। ভারতের ভেতরে থাকা পরিচিতজনের মাধ্যমে এ খবর পরিবারের কাছে পৌছে।


বিজিবির মহেশপুর-৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম পিএসসি জানান, বিএসএফ প্রথমে শহিদুলকে আহত বলে দাবি করলেও রাত ৮টার দিকে আবার জানায়, তিনি নিহত হয়েছেন।


ঘটনার পর শহিদুলের দেহ ভারতের কৃষ্ণগঞ্জ থানার হেফাজতে রাখা হয়। পরদিন রবিবার কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় এবং দেহটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। এদিকে বাংলাদেশে তার স্বজনরা প্রতিক্ষণে তাকিয়ে আছেন সীমান্তের দিকে, কখন আসবে তাদের প্রিয়জনের দেহ, কখন জানাজা হবে, কখন শেষবারের মতো তাকে দেখা যাবে।


স্থানীয়দের মতে, ৬/৭ জনের একটি দল শনিবার বিকেলে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করলে বিএসএফের মাটিয়ারী ক্যাম্পের টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। এসময় শহিদুল হাতে থাকা হাসুয়া উচু করলে বিএসএফ এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তাদের দাবি, 'শহিদুল আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।' 


গয়েশপুরের গ্রামের বাড়িতে এখন শোকের মাতম। মা–বাবা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই,বোন, সবাই বলছেন, 'আমরা কোনো বিচার চাই না এখন। শুধু লাশটা ফিরুক, শেষবারের মতো দেখতে চাই।'