আন্দোলনের মুখে থমকে গেছে UIU, শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা উপেক্ষিত
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

শনিবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (UIU) শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নতুন বাজার-গুলশান-বনশ্রী সংযোগ সড়কে অবস্থান নিলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডাগামী সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, অন্য পাশেও যান চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সকাল ৮টার দিকে UIU ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা নতুন বাজার সড়কে অবস্থান নেন। তারা দাবি জানায়, ‘অবৈধ’ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারী আচরণের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাকিবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অবরোধস্থলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। তাদের স্লোগান ছিল, "হয় বহিষ্কার বাতিল হবে, না হয় আমার লাশ যাবে", "প্রত্যাহার বহিষ্কার, তারপর হবে সংস্কার", "অথরিটি স্বৈরাচার, এবার তোরা গদি ছাড়" ইত্যাদি। এসব স্লোগানে প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার দাবিও তুলে ধরা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। পরদিন ২৮ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও শিক্ষার্থীদের বড় অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে সরাসরি ক্লাস ও সুষ্ঠু প্রশাসনের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের ১৩ দফা যৌক্তিক দাবিকে প্রশাসন আমলে নিচ্ছে না। বরং আন্দোলন দমন করতে বহিষ্কার ও তদন্তের ভয় দেখানো হচ্ছে। যদিও ট্রাস্টি বোর্ড জানিয়েছে, ২৬ মের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করলে টিউশন ফির সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হবে, তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা UIU-এর ট্রাস্টি বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, "আমরা চাই না কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হোক।"