
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের কাছে পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে একটি বড় বালুবাহী বাল্কহেড ডুবে গেছে।
সোমবার সন্ধ্যার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সুকানি সহ আরও চারজনকে দ্রুত উদ্ধার করা হয়েছে। তারা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। বাল্কহেডের পেছনের অংশ পানির ওপর থাকায় ফেরি ও অন্যান্য নৌযানের চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাহিরচর এলাকায় বাল্কহেডটি ডুবে যেতে থাকে। খবর পেয়ে রাতেই BIWTA ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জরুরি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়।
আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, বাল্কহেডের এক-তৃতীয়াংশ জেগে থাকার কারণে ফেরি ও অন্যান্য নৌযান চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকায় রাতেই বয়া স্থাপন করা হয়েছে এবং ফেরিমাস্টারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বালুর মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার রাহাতপুর থেকে প্রায় ১৬,৫০০ ঘনফুট বালু বোঝাই করে ‘শেখ হাজী হান্নান’ নামের বাল্কহেডটি দৌলতদিয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে প্রবল স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাল্কহেডটি ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং ধীরে ধীরে ডুবে যায়। ট্রলার যোগে সুকানি সহ আরও চারজনকে উদ্ধার করা হয়।
দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটের কাছে বাহিরচরের ছাত্তার মেম্বারপাড়ার কাছে বাল্কহেডের অনেক অংশ এখনো পানির উপরে দেখা যাচ্ছে। ফলে ফেরিসহ বাকি নৌযানগুলোকে বিকল্প পথ ধরে চলাচল করতে হচ্ছে।
সুকানি সেলিম মিয়া বলেন, “বাল্কহেডের ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার ঘনফুট। প্রবল স্রোতের কারণে ইঞ্জিনের শক্তি স্রোতকে সামলাতে পারেনি। ভাটির দিকে চলে যাওয়ার সময় ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটি কাত হয়ে ডুবে যায়। দ্রুত উদ্ধার না হলে আমরা প্রাণ হারাতাম।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নদীতে চলাচলকারী অনেক বাল্কহেডের নিবন্ধন ও ফিটনেস নেই। অদক্ষ সুকানিদের দিয়ে বাল্কহেড চালানো হয় এবং ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বালু পরিবহন করায় দুর্ঘটনা ঘটে।
দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক ত্রিনাথ সাহা বলেন, “পদ্মা নদীতে প্রতি মাসে প্রায় ১০-১২টি বাল্কহেডের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে স্রোত তীব্র হওয়ায় তদারকি কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মালিককে দ্রুত অপসারণ বা স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে।”